শ্রেণিকক্ষের অভাবে খোলা মাঠে পাঠদান

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মোহাম্মদ আবদুর রহিম, লাকসাম (কুমিল্লা)

মনোহরগঞ্জ উপজেলার পঞ্চগ্রাম স্কুল অ্যান্ড কলেজে শ্রেণিকক্ষ-সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের খোলা জায়গায় পাঠদান করানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে খেলার মাঠ, লাইব্রেরি না থাকায় ও বেঞ্চ সংকটে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় বেঞ্চ, টেবিল, ব্ল্যাকবোর্ডসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ বাধ্য হয়ে উন্মুক্ত জায়গায় রাখতে হচ্ছে। এতে স্কুল ও কলেজ মূল্যবান উপকরণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নতুন ভবনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করলেও কোনো উত্তর পাইনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রখর রোদে সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে খোলা আকাশের নিচে ধুলাবালুর মধ্যে ক্লাস করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

বৃষ্টির দিনে বিদ্যালয়ে পাঠদান চালু রাখলে আরো দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টির দিনে ক্লাস করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর বই-খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টিতে স্কুলড্রেস ভিজে ঠান্ডা, কাশি, নিউমনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় অনেকেই। সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বাইশগাও ইউনিয়নের কেয়ারী গ্রামে ১৯৮৪ সালে পঞ্চগ্রাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১ একর ৬৭ শতাংশ ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এই স্কুল শাখায় ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৫২৫ জন, কলেজ শাখায় ২০৯ জন শিক্ষার্থী ও ২৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা রয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান নরুল ইসলাম, আবদুল মতিন ভুঁইয়া, আবুল বাশার, হাবিব উল্লাহ ও আবুল হাশেম। এখানে পুরোনো জরাজীর্ণ ১টি টিনের ঘর। যা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সে কক্ষ দুটির টিনের চালা উড়ে গেছে, ধসে গেছে ইটের পিলারও। এছাড়াও লাইব্রেরি কক্ষের টিন উড়ে গেছে।

ওই শ্রেণিকক্ষে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির প্রায় ১২৮ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। এখন তারা বাইরের খোলা জায়গায় পড়াশোনা করছে। এদিকে পঞ্চগ্রাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং কমিটির অর্থায়নে কলেজ শাখার জন্য ২০১৫-১৬ সালে দ্বিতীয় তলা একটি ভবন নির্মাণ করেন। ভবনে নিচতলা তিনটি শ্রেণিকক্ষে চলছে স্কুল শাখার ক্লাস। দ্বিতীয় তলায় দুইটি শ্রেণিকক্ষে চলছে কলেজ শাখার ক্লাস অপর আরো একটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাত ভুঁইয়া বলেন, ঝড়ে তাদের শ্রেণিকক্ষ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এভাবে বাইরে লেখাপড়া করতে তাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। ওই শ্রেণির মাইমুনা খাতুন ও সৈকত হোসেন বলে, আমাদের স্কুলে না আছে বেঞ্চ, না আছে শ্রেণিকক্ষ।

রোদে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে কষ্ট হয়। পঞ্চগ্রাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জায়গা পর্যাপ্ত আছে। নতুন ভবন, শ্রেণিকক্ষ ও বেঞ্চ না থাকায় শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে মনোহরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, বিদ্যালয়ে একটি ভবন নির্মাণ করা খুবই জরুরি। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করব। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।