ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অবৈধ করাত কলে সয়লাব মাধবপুর

অবৈধ করাত কলে সয়লাব মাধবপুর

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার অবৈধ করাতকলগুলো কোনো মতেই যেন বন্ধ করা যাচ্ছে না। এগুলোর করাল গ্রাসে উজার হয়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। আর এতে করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব থেকে খোয়া যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। মাঝে মধ্যে প্রশাসন লোক দেখানো অভিযান করলেও তা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে প্রশাসন বলছে, অবৈধ করাতকলগুলো নিয়ে তৎপর রয়েছেন তারা। মাধবপুর উপজেলার সবচেয়ে বেশি অবৈধভাবে গড়ে ওঠা করাতকলগুলোই বনের গাছগুলোকে গিলে খাচ্ছে বলে অভিমত স্থানীয় সচেতন মহলের। সচেতন মহল বলছে, প্রশাসন যদি কঠোর হতো তাহলে বনের গাছ চুরি থেকে করাতকলগুলোতে আসার সুযোগও থাকত না। এদিকে রঘুনন্দন রেঞ্জের শাহজীবাজার বিট থেকে আকাশমনি, সেগুন, বেলজিয়াম, শাল প্রভৃতি পাচার হওয়ায় অভিযোগ উঠেছে। গাছ চুরি থেকে চুরি করে কল পর্যন্ত পৌঁছানোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ রয়েছে ওইসব বন বিটের বন কর্তৃপক্ষের অসাধু কর্মকর্তারা। শাহজীবাজার, শাহপুর, রঘুনন্দন ও জগদীশপুর বিটের সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বনের একেবারে পার্শ্ববর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক অবৈধ করাতকল। যে কলগুলোতে রাতের আঁধারে বন থেকে গাছ চুরি করে নিয়ে আসার পর রাতের আঁধারেই চিড়িয়ে কাঠ বানানো হয়ে থাকে। অভিযোগ রয়েছে বন থেকে চুরির গাছগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই সাবার করতেই স্থাপন করা হয়েছে এসব করাতকল। এসব কলের কারণেই উজার হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বনের অধিকাংশ গাছগাছালি। এদিকে উত্তর শাহপুর, নোয়াপাড়া, জগদীশপুর, সুরমা, দক্ষিণ শাহপুর বাজার, চৌমুহনী, মনতলা, ধর্মঘরসহ শতাধিক করাতকল রয়েছে। আর ওইসব করাতকলগুলোর পার্শ্ববর্তী স্থানেই গড়ে উঠেছে ফার্নিসারের দোকান। অথচ করাতকল লাইসেন্স, বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী সংরক্ষিত বন থেকে (পৌর এলাকা ব্যতীত) ১০ কিলোমিটারের ভেতরে লাইসেন্স দেওয়া যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ২০০ গজ মিটারের মধ্যে কোনো করাতকল চলতে পারবে না। কিছু কিছু ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে তাদের গাছ কাটার নেপথ্যের কারণ হলো বন থেকে চুরি করে নেওয়া গাছ। যা সহজেই লোকচক্ষুর আড়ালে কর্তন করা হয়ে থাকে। আর এতে সহযোগিতা করে আসছে বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। রঘুনন্দন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, বন আমাদের দেশের সম্পদ। সেই সম্পদকে টিকিয়ে রাখা আমাদের কর্তব্য। অবৈধ করাতকল ও গাছ চুরি রোধে আমরা সব সময় তৎপর রয়েছি। অচিরেই করাতকলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে। তাছাড়া বন বিটের চারপাশে আমাদের নিয়মিত টহল রয়েছে। গাছ চুরির ঘটনায় যদি আমাদের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ থাকে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত