প্লাস্টিকের দাপটে বিলুপ্তির পথে মৃৎশিল্প

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মনিরুজ্জামান রিপন, শেরপুর

প্লাস্টিক তৈরির সামগ্রীর দাপটে শেরপুরে মাটির তৈরিসামগ্রী কারিগর বা মৃৎশিল্পীদের দুর্দিন চলছে। নেই আগের মতো বেঁচা-বিক্রি এবং মাটির তৈরির হাঁড়ি-পাতিল ও খেলনাসহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কিছু দিন আগেও কেবল মাত্র দই এবং ফুলের টব তৈরি করা হলেও এখন মাত্র দইয়ের পাতিল তৈরি করে কোনো রকমে জীবনযুদ্ধে টিকে আছে তারা। তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এ পেশায় সংযুক্ত না করে নিয়ে যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন পেশায়।

এক সময় বিনা মূল্যে মাটি পেলেও এখন উচ্চ মূল্যে মাটি কিনে এবং অন্যান্য খরচ করে মাটির সামগ্রী তৈরিতে পোষাচ্ছে না তাদের। তারপরও বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী পৈত্রিক এ পেশা ধরে রাখতে কোনো রকমে টিকে আছে তারা। এক সময় দেশের সর্বত্র মৃৎশিল্পী বা কুমারদের সোনালি দিন ছিলো। বছরজুড়ে থাকত কুমারবাড়ি বা পাল পাড়াতে মাটির হাঁড়ি-পাতিল, খাদা (প্লেট) কলসি, জগ, গ্লাস, গো-খাদ্যের চাড়ি, মুড়ি ভাজার পাতিলসহ নানা আসবাবপত্র এবং বিভিন্ন খেলনাসামগ্রী তৈরির জমজমাট কর্মযজ্ঞ। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির তৈরি কুমার বা পালদের তৈরি হাঁড়ি-পাতিলসহ নানা সামগ্রী। শেরপুর জেলার সদর উপজেলার পৌর এলাকা সংলগ্ন ভাতাশালা ইউনিয়নের বয়ড়া পালপাড়ায় প্রায় ৬০ বছর পূর্বে মাত্র ৫-৬ ঘর পাল (কুমার) বা মৃৎশিল্পী টাঙ্গাইল থেকে এসে বসতি গড়েন। এক পর্যায়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ব্যবসা বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে। ৫-৬ ঘর থেকে তারা বর্তমানে শতাধিক ঘরে বা পরিবার হয়ে ওঠে ওই পালপাড়ায়। কিন্তু বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে প্লাস্টিকসামগ্রীর কারণে মাটির তৈরির হাঁড়ি-পাতিলসহ অন্যান্য মাটির সামগ্রীর কদর কমে আসে। ৩-৪ বছর আগেও কেবল মাত্র মিষ্টি ও দই এবং ফুলের টবের কিছুটা চাহিদা ছিল।