নওগাঁয় কৃষিতে ব্যাপক সাফল্য

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

দেশের উন্নয়নের অর্থনীতির মূল জোগান আসে কৃষি থেকে। কৃষি দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। এ দেশের জনমানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা প্রদানের প্রধানতম এবং অন্যতম উৎস কৃষি। এখনো দেশের বিপুল জনসংখ্যার কর্মসংস্থান হয়েছে কৃষিকে অবলম্বন করে। তাই দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে বর্তমান সরকার কৃষির প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। কৃষকদের কৃষিতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনা ও ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সময়ে রোপণ ও কাটা-মাড়াইয়ের জন্য যান্ত্রিকীকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শস্য ভাণ্ডার খ্যাত উত্তরের বরেন্দ্র জেলা নওগাঁ। এ জেলা ধান ও সবজি এলাকা হিসেবে পরিচিত। তবে গত কয়েক বছর থেকে আমের জেলা হিসেবেও পরিচিত পেয়েছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশেও। জেলায় বছরে প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়। জেলায়- ধান, গম, ভুট্টা, আলু, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, সরিষা, পাট ও শাক-সবজির আবাদ হয়ে থাকে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৩২ জন কৃষি প্রণোদনার আওতায় সুবিভোগী কৃষক ও উপকরণ পেয়েছে। যার ভর্তুকির টাকার পরিমাণ ৪৮ কোটি ৩১ লাখ ৭৭ হাজার ৪৬৮ টাকা। অপরদিকে ভর্তুকির আওতায় কৃষি যন্ত্রপাতি পেয়েছে ৪ হাজার ৫৬৭ জন। যার ভর্তুকির টাকার পরিমাণ ২৪ কোটি ৮১ লাখ ২০০ টাকা। প্রতি অর্থবছরে ইরি-বোরো, রোপা আমন, আউশ, রবিশস্য, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও সমলয়ে বোরো হাইব্রিড ধান চাষের প্রতি প্রণোদনা ও ভর্তুকি দেওয়া হয়ে থাকে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২৭ হাজার ২০৫ জন কৃষককে ডিজেলে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে পাট চাষের জন্য ৬ হাজার ৫৭২ জন কৃষককে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে ২০ হাজার ৮৯২ জন কৃষককে আউশ চাষে বীজ, সার, সেচ ও পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ৯১২ টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৫২০ জন কৃষককে প্রণোদনা ও পুনর্বাসন হিসেবে বীজ, সার ও পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৭৫ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯ হাজার ১০ জন কৃষককে আউশ ও নেরিকা চাষে প্রণোদনা হিসেবে বীজ, সার, সেচ ও পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১০ হাজার ৬২৮ জন চাষিকে প্রণোদনা ও পুনর্বাসন হিসেবে বীজ, সার ও পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় এবং রাজস্ব খাতে রবাদ্দ থেকে বীজ, সার, সাইনবোর্ড, রেজিস্টার ও বীজ সংরক্ষণ পাত্রে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার ৬২৮ টাকা। ২০১৭-২৩ অর্থবছরে ৪ লাখ ৬১ হাজার ৪৮২ জন চাষিকে প্রণোদনা ও পুনর্বাসনের আওতায় বীজ, সার ও পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে ৪২ কোটি ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৫৩ টাকা। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব। কৃষির প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারের তীক্ষè দৃষ্টি রয়েছে। কৃষকদের কৃষিতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করছে। সার, তেল ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্যতে ভর্তুকি দিয়ে আসছে। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যে কোনো ধরনের ফসল উৎপাদনে কৃষি অফিস থেকে মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।