শ্যামনগরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে রাস্তা নির্মাণ

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

উপজেলার ধুমঘাটের নাসির আলী ব্রিজসংলগ্ন ধানখেত সংলগ্ন ডোবা থেকে বালু তুলে রাস্তা নির্মাণ করায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। মানিকখালীর শাহাজান গাজীর বাড়ি পর্যন্ত ১৮শ’ মিটার সড়ক নির্মাণ কাজে এ বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। ধানখেত সংলগ্ন গর্ত থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলন করায় নষ্ট হচ্ছে ধানের জমি। এক কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেসার্স রফিকুল এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে উক্ত কাজ সম্পন্ন করছে। এদিকে জনবসতির মধ্যভাগ ও কৃষি জমির পাশের অংশ হতে ড্রেজার মেশিনের সহায়তায় বোরিং করে বালু উত্তোলনের কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে।

তাদের অভিযোগ পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনায় তারা শংকিত। প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন হলেও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নেই। শ্যামনগরের সর্বোচ্চ ধান উৎপাদনকারী এলাকা থেকে এভাবে বোরিং করে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেছে সচেতন এলাকাবাসী। ধুমঘাট গ্রামের মুনছুর গাজী বলেন, কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় ছয় দিন ধরে পাশের ঘুমকলি খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও কাজ বন্ধ না করে বরং চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিচ্ছে। একই গ্রামের বাসুদেব জানান, কৃষি জমির পাশ থেকে বালু উত্তোলনের ঘটনায় তারা বিচলিত। যে কোনো মুহূর্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনায় তারা আতঙ্কিত। এভাবে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনে নিষেধ করলেও কেউ তা মানছে না। বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার মেশিনের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, স্থানীয় ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডেকে নিয়ে তাকে বালু তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের অনুমতিতে বালু উত্তোলন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তার পরামর্শ ছাড়া বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রফিকুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম জানান, রাস্তার কাজ তিনি করলেও বালু সরবরাহের দায়িত্ব স্থানীয় চেয়ারম্যান নিয়েছেন। সেখানে প্রয়োজনীয় প্রায় এক লাখ ঘনফুট বালু পাশের খাল থেকে নেয়ার কথা হয় বলেও তিনি স্বীকার করেন। ঈশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিএম শোকর আলী জানান, পাশের রফিকুল ইসলামের পরামর্শে তার ঘের উঁচু বলে সেখান থেকে বালু নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষকে সামলে কাজ করতে হচ্ছে- উল্লেখ করে পরবর্তীতে প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলেও জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তার হোসেন বলেন, অবৈধভাবে কোথাও বালু উত্তোলনের সুযোগ নেই। এমন ঘটনার খবর পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।