নান্দাইলে লাউ চাষে কৃষকের সাফল্য

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শামছুজ্জামান বাবুল, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

খাদ্য তালিকায় লাউ এবং লাউশাক ময়মনসিংহ অঞ্চলে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় পান্যা লাউ (সবুজ লাউ) সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। পান্যা লাউয়ের শাক এ অঞ্চলের মানুষদের মজাদার খাবারের অন্যতম। সব মহলের প্রিয় খাবার তালিকায় লাউ ও লাউশাকের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে এ অঞ্চলের গৃহিণী থেকে শুরু করে কৃষকরা তাদের বাড়ির আঙিনায়, পতিত জমিতে সময়মতো লাউ বীজ বপণ করতে কখনো ভুল করেন না। এর মধ্যে লাউ ও লাউশাকের ব্যাপক চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে কৃষকরা অধিক লাভের আশায় লাউ ও লাউশাক চাষে বেশি মনোযোগী হয়েছেন। আবার বাণিজ্যিকভাবে লাউশাক চাষের ক্ষেত্রে চাষিদের ব্যাপক আগ্রহ দিনে দিন বাড়ছে। স্থানীয় বাজারে লাউ ও শাক (লাউপাতা, ডগা) এর আকাশচম্বী জনপ্রিয়তা, চাহিদার পাশাপাশি লাউশাক আর লাউয়ের বাজার দরও বেশ চড়া। তাই অধিক মুনাফার আশা করে চাষিরা আগাম (সময়ের আগেই) লাউ চাষে নেমে পড়েন। তেমন কোনো রোগ-বালাইয়ে সাধারণত লাউ গাছ আক্রান্ত হয় না। ফলে অল্প সময় ও কম পুঁজিতে ভালো ফলন ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভবানের সুযোগে এ অঞ্চলের চাষিরা আগামী দিনের স্বপ্ন বুননের পথ আগলে ধরেছেন। এতে সহজেই তাদের মুখে সাফল্যের হাসি ফুটছে। এবার লাউয়ের বাজার দর ভালো থাকায় কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভবান হচ্ছেন। এতে চাষাবাদে মনোযোগ বাড়ছে কৃষকদের। সরেজমিন নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সুতারাটিয়া গ্রামের মো. মাজহারুল ইসলাম খেত থেকে ১৫০ পিস লাউ তুলে বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি জানান, বর্তমান সিজনে লাউয়ের ব্যাপক চাহিদা। প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারছেন। এই মৌসুমে তিনি দুই কাটা (২০ শতাংশ) জমিতে লাউ চাষ করেছেন। প্রায় দশ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সন্তোষজনক ফলন হয়েছে। এই পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। আরো ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। এখানকার কৃষকরা বাড়ির পাশে, বাড়ির আঙিনায়, পতিত জমিতে লাউ গাছ লাগিয়ে লাউ এবং লাউশাক বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও উপজেলায় আচারগাঁও ইউনিয়নের ঝাউগড়া, গইছখালী, ধরগাঁও, সিংদই, রাঙ্গামাটিয়া এলাকা এবং সিংরইল, মুশুল্লি, খারুয়া, বীরবেতাগৈর, চরবেতাগৈরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে লাউ এবং লাউশাক চাষের ক্ষেত্রে চাষিদের ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্যণীয়। নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, এ উপজেলার আচারগাঁও, বীরবেতাগৈর, চরবেতাগৈর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় লাউ ও লাউশাকের ব্যাপক আবাদ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হবে।