দুমকিতে নদী ভাঙনে দিশাহারা গ্রামবাসী

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. রাকিবুল হাসান, দুমকি (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার সর্বনাশা পায়রার করাল গ্রাসে ঘরবাড়ি ও ভিটেমাটি হারিয়ে আশ্রয়হীন বসবাস করছেন। বেশ কয়েকটি পরিবার তিন থেকে চারবার বসতঘর স্থানান্তর করেও শেষ রক্ষা হয়নি। পায়রার অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে সবকিছু। গত রোববার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাহের চরের পায়রার তীরে মানুষের হাহাকার। তাদের বসতভিটা, গাছপালা, পুকুর, ২টি মসজিদ, ১টি মন্দির, রাস্তা ঘাট, টিউব? ওয়েলসহ সবকিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী আ. রাজ্জাক, সুধীর পাইক, বিনয় পাইক ও পারুল বেগম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এই ভয়াল পায়রার থাবায় সবকিছু হারিয়ে আশ্রয়হীন জীবনযাপন করছি। নদীর ভাঙন দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ঘরবাড়িসহ পুকুর ও রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত চারবার বসতঘর স্থানান্তর করেও শেষ রক্ষা হয়নি। আমাদের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, মন্দির হারিয়েছি। এমনকি গভীর নলকূপ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার কারণে সুপেয় পানি পর্যন্ত পান করতে পারছি না। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহিন গাজী বলেন, পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে অর্ধশত পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে, এখন তারা পাড়া প্রতিবেশীর বাড়িতে, রাস্তার পাশে, খাস জমিতে ছাপড়া দিয়ে কোনো রকম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আঙ্গারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ গোলাম মর্তুজা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে গত বছর ২২০০০ জিও ব্যাগ ভাঙনকবলিত স্থানে স্থাপন করা হয়েছিল যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য ছিল। যা কোনো কাজেই আসেনি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর আবেদনপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গেও দেখা করেছি। অদ্যবধি তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। তিনি আরো জানিয়েছেন, অনতিবিলম্বে ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে গ্রামটি নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে দুমকি উপজেলা

নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পার্শ্ববর্তী সরকারি খাসজমিতে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছি এবং পরবর্তী সময়ে তাদের পুনর্বাসনের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো দ্রুত সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।