ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দিনাজপুরে বসতি এলাকায় বর্জ্যের স্তূপ

হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য
দিনাজপুরে বসতি এলাকায় বর্জ্যের স্তূপ

পৌর এলাকার জনবসতি এলাকায় সব বর্জ্য ফেলে জমানো হচ্ছে স্তূপ। বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। জন্ম নিচ্ছে রোগবাহী মশা-মাছি। বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ দোকানী ও পথচারীরা। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার বাজার সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ রোডস্থ কাটিহারধর ব্রিজের পশ্চিমে নির্মিত স্লিপারে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ফেলা হচ্ছে পৌরবাজারের সকল বর্জ্য। ফলে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে আবাসিক এ এলাকাটি। রাখা হচ্ছে দুর্গন্ধ ও বিষ্ঠাযুক্ত ব্রয়লার মুরগি বহনকারী ভ্যানও। সড়কের পাশে ভাগাড় থেকে ময়লা তুলে খাচ্ছে একদল কুকুর। দুর্গন্ধে পথচারী ও স্কুল শিক্ষার্থীরা নাক চেপে যাতায়াত করছে। ওই ময়লা স্তূপের দু’পাশেই রয়েছে বসতবাড়ি। এতে নষ্ট হচ্ছে ওই এলাকার পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরবাজারসহ আশপাশের এলাকার সব ধরনের বর্জ্য এখন সেই স্থানে ফেলছেন পৌরসভায় নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। ফলে সেখানে এখন জমা হয়ে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। এতে মানুষ সুযোগ বুঝে প্রসাবসহ ত্যাগ করছেন মল। ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এলাকায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। জন্ম নিচ্ছে রোগবাহী মশা-মাছি। শহরের প্রধান সড়কসহ উপজেলা পরিষদ রোড হওয়ায় ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের পাশে আবাসিক এলাকায় আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধে বসবাস ও যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে।

আরো বাড়ছে ভয়াবহ ডেঙ্গু মশার আতঙ্ক। প্রথমশ্রেণির পৌরসভা হলেও পৌরএলাকায় পৌরসভার নেই নির্দিষ্ট কোনো ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়। ফলে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা আবাসিক এলাকায় যত্রতত্র খোলাস্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। এমনকি নদীতেও ফেলে নষ্ট করছেন নদীর ভারসাম্য। স্কুল শিক্ষার্থী তাসমিয়া আফরিন ও তানজিদ হাসান বলেন, ‘আমরা ওই স্থান দিয়েই প্রতিদিন স্কুলে যাই। ওই সড়ক দিয়ে গেলেই দুর্গন্ধে বমি আসে। অনেক সময় কুকুরের দল সেখানে জটলা বাঁধায় ফলে আতঙ্কিত হয়ে ওই রাস্তা অতিক্রম করতে হয়। দ্রুত সেখান থেকে ময়লা-আবর্জনা সড়ানোর দাবি জানাই।’ স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মতি. মহশীন আলী ও আউয়াল বলেন, ‘কাটিহার সংলগ্ন এলাকায় আমরা ব্যবসা করি। আগে এখানে ময়লা ফেলা হতো না। কিন্তু ইদানীং পৌরবাজারের সব ময়লা-আবর্জনা এনে ব্রিজের পাশের স্লিপারে ফেলা হচ্ছে। বর্তমানে সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমা হয়েছে। একটু বাতাস উঠলেই দুর্গন্ধ এলাকায় ছড়িয়ে যায়। অসহীয় এ গন্ধেই থাকতে হয় আমাদের নাক চেপে।’

স্থানীয় বাসিন্দা গনেশ গুপ্ত, অনুপ গুপ্ত ও মো. বেলাল বলেন, ‘ব্রিজের পাশেই আমাদের বাড়ি। সেখানে রোজ ফেলা হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য। ফলে বাড়িতে থাকায় দায় হয়ে পড়ছে। সামান্য বাতাসে পুরো বাড়ি দুর্গন্ধে একাকার হয়ে যায়। একইসঙ্গে রাত হলেই বাড়ছে মশার উৎপাত। খাবারের ভোঁ ভোঁ করছে মাছি।

সব মিলিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। দুর্গন্ধের কারণে এত গরমের মধ্যেও দরজা-জানাল খোলা যায় না। আমরা দ্রুত এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই। ‘অটোরিকশাচালক নূর ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজটির ওখানে দাঁড়ানোই যায় না। দুর্গন্ধে বমি চলে আসে। আশপাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং চারপাশে ঘরবাড়ি রয়েছে।’ ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র মো. মাহমুদ আলম লিটন বলেন, ‘সেখান থেকে দ্রুত ময়লা-আবর্জনা অপসারণের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত