ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কমছে দেশীয় মাছ

নওগাঁয় অবাধে ব্যবহার হচ্ছে চায়না জাল

নওগাঁয় অবাধে ব্যবহার হচ্ছে চায়না জাল

বর্ষার শুরুতে নওগাঁয় বেড়াজাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মা মাছ নিধনের ফলে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। আবার একশ্রেণির অসাধু জেলে চায়না দোয়ারি জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে। এতে ভবিষ্যতে দেশীয় জাতের মাছ সংকটের আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত এসব জাল অপসারণ করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে অসাধু জেলেদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার দাবি জানানো হয়েছে। জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী- জেলায় পুকুর ও বিভিন্ন জলাশয়ে বছরে ৮২ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের মাছ উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ২ হাজার ৫০ কোটি টাকা। জেলায় মাছের চাহিদা রয়েছে ৬১ হাজার মেট্রিক টন। বর্ষায় বিভিন্ন নদী-নালা-খাল-বিল ও ডোবায় পানি জমেছে। তবে এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় পানির পরিমাণও কম। এসব জলাশয়গুলোতে দেশীয় জাতের বিপুল মাছের সমারোহ থাকার কথা ছিল। কিন্তু তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। হাতেগোনা কয়েকজন অসাধু জেলে চায়না দোয়ারি জাল দিয়ে বাহারি জাতের মাছ উজাড় করছে। এতে প্রাকৃতিকভাবে রেণু পোনা উৎপাদন ও আহরণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। হাট-বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে কারেন্ট জাল। যারা চায়না জাল ব্যবহার করছেন, তারা ক্ষতির বিষয়গুলো বুঝতে পারছেন না। জেলেদের জালে দিনশেষে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত মাছ। ফলে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের। এর একটি কারণ নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারে অবাধে মাছ শিকারের ফলে জলাশয়গুলোতে কমেছে দেশীয় জাতের মাছ। দেশীয় মাছ রক্ষায় দ্রুত এসব ক্ষতিকর জাল ও অসাধু মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মৎস্যজীবী। নওগাঁ সদর কৃষ্ণপুর গ্রাম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ কুমার বলেন, বর্ষার শুরুতে বেড়াজাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মা মাছ নিধনের ফলে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় মাছ। খুবই ক্ষতিকর রিং জাল (চায়না দোয়ারি)। এ জাল পানিতে ফেলা হলে ডিম থেকে শুরু করে সব ধরনের মাছ তার মধ্যে ঢুকে যায়। এমনি শামুক, কাঁকড়া ও সাপ এ জালের মধ্যে একবার ঢুকলে বের হওয়ার উপায় নেই। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে মৎস্যজীবীরা জলাশয়গুলোতে মাছ সংকটে পড়বে। নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জছিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, একশ্রেণির অসাধু জেলে চায়না দোয়ারি (রিং জাল) দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে। মৎস্যজীবীদের তালিকা নিশ্চিত করে এসব নিষিদ্ধ ক্ষতিকর জাল বাতিল করা প্রয়োজন। প্রশাসনকে বিষয়টি তদারকি করা দরকার। তাহলে সাধারণ মৎস্যজীবীদের জন্য সুবিধা হবে। নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আমিমুল এহসান বলেন, গত আগস্ট মাসে ১৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযান পরিচালনা করে ৬৯ হাজার ৭৩০ মিটার কারেন্ট ও চায়না দোয়ারি জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া ৭৩ কেজি বিভিন্ন জাতের মাছ উদ্ধার করে এতিম খানায় বিতরণ করাসহ সাড়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নিয়মিত অভিযান অব্যহৃত আছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত