ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কুড়িগ্রামে বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি

কুড়িগ্রামে বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নই বন্যায় প্লাবিত হয়। প্রথম দফা বন্যার পানি ব্যবহার করে এসব এলাকার কৃষকরা আমনের চাষ করলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার বন্যায় তা নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে নিজস্ব ধানের চারা না থাকায় এখন নতুন করে চাষাবাদ করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে কৃষকদের।

চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামের কৃষক ইয়ার আলী (৪৫) বলেন, দুই বিঘা জমিতে ধান গেড়েছিলাম। এক বিঘা জমির ধান নষ্ট হইছে। চারার দাম অনেক বেশি, আর নতুন করে রোপণ করেও লাভ নাই। এখন সময় নেই রোপণ করার। তখন পাশের খেতেই নতুন করে ধানের চারা লাগাচ্ছিলেন আরেক কৃষক কাচুয়া শেখ (৪৮) বলেন, এক বিঘা জমিতে ধান গাড়ছিলাম তার কাঠা দশেক মাইর (নষ্ট হয়েছে) গেছে। এখন তো বেছনও (ধানের চারা) জোগান পারছি না। আরেক কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, বন্যার পানিতে ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

অনেক ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে রোপণ করতে হচ্ছে। বেছন পাই না, বেছনের দাম অনেক বেশি। এই পরিস্থিতিতে আমরা অনেক কষ্টে আছি। চর রাজিবপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এবারের কয়েক দফা বন্যায় কোদালকাটি, মোহনগঞ্জ ও সদর ইউনিয়নের প্রায় ৯৩০ হেক্টর জমির রোপা আমন নষ্ট হয়ে গেছে। তার মধ্যে ৬১৯ হেক্টর আংশিক এবং ৩১১ হেক্টর সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেছে।

এ ছাড়া ৩৫ হেক্টর জমির শাকসবজি নষ্ট হয়ে গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোদালকাটি ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া, মধ্য চরসাজাই, দক্ষিণ চরসাজাই, শংকর মাধবপুর, পাইকান্টারিপাড়া, মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের চরনেওয়াজী, বড়বের, ভেলামারী, কীর্তনতারি এবং সদর ইউনিয়নের টাঙালিয়াপাড়া, পশ্চিম রাজিবপুর, মরিচাকান্দি, বালিয়ামারী সব বেশ কিছু এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধানের চারা পানিতে ডুবে যাওয়ায় অতিরিক্ত গরমে কয়েক দিনেই পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন নতুন করে চারা লাগানো ছাড়া আর উপায় নেই।

তবে সংকট দেখা দিয়েছে আমন চারার। বন্যায় বীজতলাগুলো নষ্ট হওয়ায় অতিরিক্ত দামে চারা কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। এক পোন (২০ গোণ্ডা) চারার আটির দাম নিচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। ভালো মানের চারার দাম আরো বেশি। এ বিষয়ে চর রাজিবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রতন মিয়া বলেন, আমরা উপজেলার কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন তৈরি করেছি। আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। যে জমিগুলো নষ্ট হয়েছে কৃষকরা সেগুলোতে নতুন করে চারা রোপণ করছে। আশা করি, কোনো জমি ফাঁকা থাকবে না। যদি কোনো জমি ফাকা থাকেও পরবর্তীতে কৃষকরা আগাম জাতের ফসল লাগাতে পারবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের যতোটা সম্ভব সহায়তা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত