ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশাহারা কৃষক

ধানক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশাহারা কৃষক

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কৃষকরা বর্তমানে আমন ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এবার ধানক্ষেতে মাজরা, কারেন্ট, গান্ধিসহ নানা ধরনের পোকার আক্রমণে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা। এ বছর পরিমিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং তীব্র গরমের কারণে চারা রোপণের পরপরই মাজরা পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। কীটনাশক দিয়েও আক্রমণ থামানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের। এ অবস্থায় লোকসানের শঙ্কা করছেন তারা। তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে এবং পোকার আকার ও ধরন বুঝতে মাঠে-মাঠে আলোর ফাঁদ পাতা হয়েছে। উপজেলার চাপড়া, নন্দনালপুর ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যুতের সাহায্যে লাইটের আলো জ্বালানো রয়েছে। আলোর নিচে গামলা ভরা পানি রাখা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পোকা উড়ে এসে পড়ছে। তারাপুর এলাকার কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, এবার মাঠে প্রচুর পোকার আক্রমণ। ওষুধে কাজ হচ্ছে না। সেজন্যই আলোর ফাঁদ পেতে পরীক্ষা করা হচ্ছে। উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের নীলের মাঠের ধানক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, ধান গাছের চারায় শীষ বের হওয়া শুরু হয়েছে। তবে আক্রমণ করেছে পোকা। মাজরা পোকায় শীষগুলো কেটে দিয়েছে। ফলে চারার মাথায় লালচে ভাব।

কোথাও কোথাও চারা মরেও গেছে। সেগুলো কৃষকরা ছিঁড়ে ফেলছেন। পোকার আক্রমণ রোধ করতে স্প্রে মেশিন দিয়ে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন কৃষক। কেউ কেউ আবার নিড়ানির কাজ করছেন। এ সময় কথা হলে কৃষক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি আড়াই বিঘা জমিতে ধানচাষ করেছেন। বিঘা প্রতি প্রায় ১৬ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। এ বছর চারা রোপণের পরপরই পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। স্প্রে করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে পোকার আক্রমণ বেশি। কৃষকদের অতিরিক্ত ও ভুল স্প্রে ছিটানোর কারণে পোকামাকড় আরো শক্তিশালী হচ্ছে। সেজন্য আলোর ফাঁদ পেতে কোন কোন পোকা আছে, তার তালিকা করা হচ্ছে। ছাতিয়ান গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, তিনি ৪ বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছেন। তার জমিতেও স্থানীয় সারের ডিলারদের পরামর্শে স্প্রে করছেন। তার ভাষ্য, মাঠে তিনি কোনো দিনও কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা পাননি। চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়ার কৃষক কাজী তুহিন বলেন, এবার পোকার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে কৃষক। বারবার স্প্রে করেও পোকা কমছে না। বাজার ভেজাল ওষুধে সয়লাব। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় প্রায় ১৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০০ হেক্টরের বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে এবার বিভিন্ন পোকার আক্রমণ বেশি। আক্রমণ মোকাবিলায় তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। মাঠে আলোর ফাঁদ পেতে পোকা দমনের জন্য মাঠকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত