ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত চাষি

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত চাষি

ঋতুচক্রে শরৎ চলমান। বছরের এ সময়টায় রবি মৌসুমের শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত বগুড়ার চারা পল্লির চাষিরা। বীজতলায় সবজির চারা তৈরি, বিক্রি ও পরিচর্যা করতে ব্যস্ত নার্সারিগুলো। অন্যদিকে জমি ফাঁকা হতেই শীতকালীন সবজি চাষে প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাষিরা। বগুড়ার শাজাহানপুর ও সদর উপজেলার শাহানগর, কামারপাড়া, মহাস্থানসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে নতুন নতুন সবজির বীজতলা নিয়ে চাষিদের এমন কর্মব্যস্ততা দেখা যায়। সরেজমিন দেখা যায়, চাষিরা কাকডাকা ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন বীজতলা তৈরির জন্য। কাঁচি, কোদাল, পাচুনসহ (স্থানীয় ভাষায়) আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি নিয়ে নেমে পড়ছেন জমিতে। কেউ কেউ প্রস্তুতকৃত জমিতে রোপণ করছেন বীজ। অনেকেই হাড়ভাঙা পরিশ্রমে ব্যস্ত রোপনকৃত বীজতলা পরিচর্যায়। বীজতলা প্রস্তুতের পর জমির মাঝ বরাবর নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ছোট ছোট আইল তৈরি করে বীজ রোপণ করা হয়েছে। এরপর বাঁশের তৈরি ‘বেতি’গুলো রিংয়ের মতো বসিয়ে ওপর পলিথিন দিয়ে পুরো বীজতলা মুড়িয়ে দেওয়া হয়। পলিথিন মোড়ানো জমিতে চাষ করা হচ্ছে সবজির চারা। শুধু পলিথিন টাঙানো জমিই নয়; বিশেষ ধরনের নেটে ঘেরা রয়েছে অনেক জমি। প্রতিটি জমিতেই পুরুষের সঙ্গে নারীও কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমিতে প্লাস্টিকের ট্রেতে নারকেলের ছোবড়া বিছিয়ে তাতে জৈব সার ব্যবহার করে উৎপাদন করা হচ্ছে সব ধরনের সবজি চারা। শাজাহানপুর উপজেলার চুপিনগর ও খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের আড়াই শতাধিক নার্সারিতে রোগবালাইমুক্ত, উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি চারা তৈরি হচ্ছে। চারা তৈরির এই পল্লী থেকে উৎপাদিত সবজি চারা দেশের প্রায় ২৫টি জেলায় সরবরাহ করা হয় প্রতি মৌসুমে। নার্সারি মালিক সামছুল ইসলাম জানান, বীজতলায় গরম পরিবেশ সৃষ্টি করতে পলিথিন দিয়ে ঘরের মতো তৈরি করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ঢেকে দেওয়া পলিথিনগুলো সামান্য উঠিয়ে এক পাশ ফাঁকা করে দেওয়া হয়। যেন বাইরের বাতাস বীজতলায় প্রবেশ করতে পারে। বীজ রোপণ থেকে শুরু করে প্রথম এক সপ্তাহের মতো এ কার্যক্রম চলে। বীজ গজিয়ে ওঠার পর চাষিরা সেই পলিথিনগুলো সরিয়ে ফেলেন। এরপর বিক্রির আগ পর্যন্ত নিয়মিত চলে পরিচর্যা। পুরুষদের পাশাপাশি এ কাজে নারীরাও সহায়তা করে থাকেন। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুর রহমান জানান, বগুড়ার শাজাহানপুর, শিবগঞ্জ, শেরপুর, সদর, গাবতলী ও কাহালু উপজেলায় চাষিরা নার্সারি আকারে নানা জাতের সবজি বীজতলা তৈরি করেছেন। প্রতি বছরের মতোই এবারও শাজাহানপুর উপজেলার শাহনগর এলাকায় ব্যাপক চারা উৎপাদন করা হয়েছে। স্বল্পমূল্যে গুণগত মানসম্পন্ন চারা পাওয়ায় প্রতি বছর এখানকার চারার চাহিদা বাড়ছে। গত বছর রবি মৌসুমে বগুড়া জেলায় প্রায় ১২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ বছর কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে মন্তব্য এ কৃষি কর্মকর্তার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত