বন্ধ হয়নি শ্যামনগরে কৃষিজমি থেকে বালু কেটে রাস্তা নির্মাণকাজ

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

উপজেলার ধুমঘাটের নাসির আলী ব্রিজসংলগ্ন ধানখেত-সংলগ্ন ডোবা থেকে বালু তুলে রাস্তা নির্মাণ করায় পরিবেশ হচ্ছে ধ্বংস। মানিকখালীর শাহাজান গাজীর বাড়ি পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ মিটার সড়ক নির্মাণকাজে এ বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হলে ও বাল উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। যে কোনো মুহূর্তে এলাকাবাসীর সাথে সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

শ্যামনগরের ধূমঘাট নাসের আলী ব্রিজ থেকে মানিকখালী পর্যন্ত ধানের জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলন করায় নষ্ট হচ্ছে ধানের জমি। ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে মেসার্স রফিকুল এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাধানে ওই কাজ সম্পন্ন করছে। এদিকে জনবসতির মধ্যভাগ ও কৃষিজমির পাশের অংশ থেকে ড্রেজার মেশিনের সহায়তায় বোরিং করে বালু উত্তোলনের কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। তাদের অভিযোগ- পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনায় তারা শংকিত। প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন হলেও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথ্যা নেই। শ্যামনগরের সর্বোচ্চ ধান উৎপাদনকারী এলাকা থেকে এভাবে বোরিং করে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেছে সচেতন এলাকাবাসী। ধুমঘাট গ্রামের মুনছুর গাজী বলেন, কাপেটিং রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় ছয় দিন ধরে পাশের ঘুমকলি খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও কাজ বন্ধ না করে বরং চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিচ্ছে। একই গ্রামের বাসুদেব জানান, কৃষিজমির পাশ থেকে বালু উত্তোলনের ঘটনায় তারা বিচলিত। যেকোনো মুহূর্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনায় তারা আতঙ্কিত। এভাবে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনে নিষেধ করলেও কেউ তা মানছে না। বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার মেশিনের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, স্থানীয় ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডেকে নিয়ে তাকে বালু তোলার নির্দেশে দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের অনুমতিতে বালু উত্তোলন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তার পরামর্শ ছাড়া বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রফিকুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম জানান, রাস্তার কাজ তিনি করলেও বালু সরবরাহের দায়িত্ব স্থানীয় চেয়ারম্যান নিয়েছেন। সেখানে প্রয়োজনীয় প্রায় ১ লাখ ঘনফুট বালু পাশের খাল থেকে নেয়ার কথা হয় বলেও তিনি স্বীকার করেন। ঈশ্বরীপুর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিএম শোকর আলী জানান, পাশের রফিকুল ইসলামের পরামর্শে তার ঘের উঁচু বলে সেখান থেকে বালু নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষকে সামলে কাজ করতে হচ্ছে- উল্লেখ করে পরবর্তীতে প্রতিবেদকের সাথে কথা যোগাযোগ করবেন বলেও জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন বলেন, অবৈধভাবে কোথাও বালু উত্তোলনের সুযোগ নেই। অথচ এখনও ঠিকাদারের লোকজন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এলাকাবাসী অভিযোগ দিলেও তা আমলে না নেওয়ার অভিযোগ হয়েছে।