সখীপুরে ব্যবসায়ীদের দখলে হাসপাতাল দেখার কেউ নেই

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

দেখে বুঝার উপায় নেই এটি হাসপাতাল নাকি হাটবাজার। সখীপুর উপজেলা সদর থেকে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থান বড়চওনা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আশপাশের ৮ থেকে ১০টি গ্রামের লোকজন স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসে এখানে। উপজেলার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ বাজার বড়চওনা। আর বড়চওনা বাজারের বুক চিরে ঢাকা-সখীপুর-সাগরদিঘী ব্যস্ততম সড়কটি গেছে। যানবাহনের চাপ ক্রমে বাড়ছেই সড়কে। সড়ক ঘেঁষেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অবস্থান। সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার বড়চওনা বাজারের হাটবার। যদিও এখন আর হাটবারের অপেক্ষায় নেই মানুষ; প্রতিদিনই বাজারগুলো এখন হাটবার। সরেজমিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির চিকিৎসাসেবায় দেখা গেছে এক দুর্ভোগের চিত্র। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির উত্তর-দক্ষিণ এমন কি প্রবেশ পথজুড়েই দোকানপাট গড়ে ওঠেছে। কাঁচাপণ্য, ফলসহ নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বিকিকিনি চলে দোকানগুলোতে। এতে ভয়ানকভাবে বিঘ্ন ঘটছে চিকিৎসাসেবায়। চিকিৎসাসেবা প্রার্থীরাও অনায়াসে হাসপাতালে ঢুকতে পারছে না। এ কারণে নাকি হাটবারের দিন কম আসেন রোগী। এ অবস্থা দেখে যে কারোর মন বিগড়ে গেলেও কেউ নাকি প্রতিবাদও করেন না। কারণ স্থানীয় প্রভাবশালীদের শেল্টারেই চলে ওই সব দোকানপাট। তারা দোকান থেকে খাজনাও নেন; কেউ কেউ দখল করছেন হাসপাতালের জমি। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, এক একর (১০০ শতাংশ) জমির ওপর গড়ে ওঠেছে হাসপাতালটি। এর আশপাশে স্থানীয় বাজারের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা জমি দখল করে ফেলেছে। অর্ধেকেরও কম জমি এখন দখলে রয়েছে বলে হাসপাতালের এক দায়িত্বশীল কর্মকতা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন হাসপাতালটিকে গিলে খাচ্ছে বাজার। বড়চওনা বাজার বণিক বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, জনস্বার্থে হাসপাতালটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ; ব্যবসায়ীদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে বারবার পদক্ষেপ নিয়েও ব্যর্থ হচ্ছেন।

হাট ইজারাদার আবু সাঈদ শিকদারের ভাষ্য, তার কথা ব্যবসায়ীরা মানছে না; চিকিৎসা সেবা যাতে ব্যাহত না হয়; হাসপাতালের জমি দখলমুক্ত করতে তিনি উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আবদুল মালেক সিদ্দিকী ও ফার্মাসিস্ট কামরুল ইসলাম জানান, চিকিৎসাসেবা দিতে বিঘ্ন ঘটে। এর নানা কারণ আপনারা সাংবাদিকরা তো সরেজমিন দেখেই গেলেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রুহুল আমিন মুকুল বলেন, বড়চওনা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির সার্বিক বিষয়াদি তিনি অবগত আছেন। এর আগে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে দোকানপাটগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছিল। আবারও আগের অবস্থায় ফিরে গেছে শুনেছি। খুব শিগগিরই উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে দোকানপাটগুলো তুলে দিয়ে নির্বিঘ্নে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে বলে জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আলম বলেন, এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিভিন্ন দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছিল। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীরা যাতে নির্বিঘ্নে সেবা নিতে পারেন, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দোকানপাটগুলো উচ্ছেদের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।