আউট অব স্কুল চিলড্রেন কর্মসূচি
শতভাগ শিক্ষার হার বাস্তবায়ন
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আজাহার আলী, বগুড়া
বগুড়ার শেরপুরে রবিউলের পুত্র রবিন। মা-বিচ্ছেদের কারণে রবিন নানার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে বসবাস করে। একমাত্র উপার্জনের মানুষ তার নানা। ভ্যান চালিয়ে মেয়ে-নাতিসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করে। ঠিকমতো খাবার জোটে না, পড়াশোনার চিন্তাই আসে না রবিনের। একই এলাকার বেলালের পুত্র নয়ন খাবার হোটেলে কাজ করে। পড়াশোনা বন্ধ ছিল। রেশমা খাতুন নামের এক ঝরেপড়া শিক্ষার্থীর বাবা রিকশাচালক। তার লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারত না। তার মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। কিন্তু উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আসার পর তারা খুব খুশি। নতুন করে আবার লেখাপড়া করতে পারবে তারা। আগামীতে ভালোভাবে লেখাপড়া করে ভালো মানুষ হতে পারবে। পরিবারের উপরে পড়াশোনার খরচের চাপ থাকবে না। কখনো ভাবিনী আমাদের জীবনে আবারো এ ধরনের শিক্ষার সুযোগ আসবে। বর্তমান সরকার আনুষ্ঠানিক শিক্ষার মূলধারায় আমাদের নিয়ে এসে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছে। সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার দৃঢ়ভাবে সচেষ্ট। এরই আলোকে বগুড়ায় ঝরেপড়া শিশুরা আবারো শিক্ষায় মন দিয়েছে। সবার জন্য শিক্ষা অর্জনে সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার পর আমরা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় শিক্ষা গ্রহণকালে মাসিক ১২০ টাকা, বিনামূল্যে বছরে এক সেট স্কুল ড্রেস, স্কুল ব্যাগ, আইডি কার্ড, ফি ছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, সব শিক্ষার উপকরণ, খেলার উপকরণ ও সাংস্কৃতিক চর্চা ফ্রিসহ মাসিক অভিভাবক সভা, পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা শেষে সনদ পাচ্ছি। বগুড়া জেলার ৯টি উপজেলায় ৮ থেকে ১৪ বছরের ঝরেপড়া শিশুরা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। আমরা আবারো শিক্ষামুখি হয়ে আনন্দ প্রকাশ করছি। বগুড়া জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক এএইচএম রবিউল করিম বলেন, আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন কর্মসূচির মাধ্যমে শতভাগ শিক্ষার হার বাস্তবায়ন হবে। এটি বাস্তবায়নে কেহই আর নিরক্ষর থাকবে না। প্রতিদিন শিখন কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা গিয়ে পড়ালেখা করছে। এতে করে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাবে, এসডিজির উদ্দেশ্য সফল হবে। ছেলে-মেয়ে পরিবারের কাছে বোঝা নয় বরং সম্পদে পরিণত হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনির পর কারিগরি শিক্ষাগ্রহণ করে নিজের পরিবারকে সচ্ছলতা দিতে পারবে। শিক্ষিত হওয়ার ফলে দেশ আরো এগিয়ে যাবে। বর্তমান সরকারের এমন মহৎ উদ্যোগের ফলে দেশে একটিও শিশু নিরক্ষর হয়ে বেড়ে উঠবে না। দিন যাবে শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে।