দিনাজপুরে টানা বর্ষণে আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষতির শঙ্কা

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

আগাম শীতকালীন সবজি কৃষিনির্ভর দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলাটি বিভিন্ন কৃষিপণ্য চাষাবাদ ও রপ্তানির মাধ্যমে সারাদেশে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। কৃষির ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ। তারা সরাসরি কৃষিকাজ ও চাষাবাদের সাথেই সম্পৃক্ত। তাদের অর্থনৈতিক আয়ের বড় অংশ আসে কৃষি থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় আর্থিকভাবে মুনাফা লাভ ও স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় এই এলাকার অধিকাংশই কৃষক পতিত জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছে এবং আগাম সবজি চাষের মাধ্যমে সবুজ শ্যামল ছায়ায় ঢেকে গেছে অধিকাংশ এলাকা তাদের এই আগাম শীতকালীন চাষযোগ্য সবজির মধ্যে ফুলকপি, পাতাকপি, সীম, মুলা, কাঁচামরিচ, টমেটো, বরবটি, বেগুন, পালংশাক, লালশাক, লাউ অন্যতম। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৩২ হাজার ৮৯৬ হেক্টর। এর মধ্যে ৯০০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ করা হয়েছে। এবার খরিপ-২ মৌসুমে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯৫২ হেক্টর জমিতে এবং রবি মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিনের তাপদাহের পর গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলায় ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম। এই অতি বৃষ্টির ফলে উপজেলার সবজিগ্রাম নামে খ্যাত সাতোর ইউনিয়নের প্রাণনগরসহ মোহনপুর, শিবরামপুর, সুজালপুর, শতগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠে থাকা আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সবজি চাষিরা। সেই সঙ্গে নেতিয়ে পড়েছে সবজি গাছের চারা এবং উঠতি ফসলের অনেক পানিতে পচতে শুরু করেছে এই বৃষ্টিতে। এ ব্যাপারে উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামের সবজি চাষি গ্রামের আবু রায়হান জানান, আমি একটি বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করেছি। প্রতিটি গাছ বেড়ে উঠেছিল সতেজ হয়ে কিন্তু বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে ফুলকপির গাছগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং নেতিয়ে পড়েছে মাটির সাথে। একই কথা জানিয়ে সবজি চাষি কায়সার আহমেদ বলেন, আমি শীতকালীন আগাম সবজি পাতাকপি, ফুলকপি চাষ করি। এতে কয়েক বছর ভালো টাকা লাভ করেছি। তবে এবার বৈরী আবহাওয়ার কয়েক দিন প্রচণ্ড তাপদাহের পর টানা বর্ষণ শুরু হয়েছে। এতে ফসলের যে ক্ষতি হলো, আসল টাকা ঘর করতে পারব কি না জানি না। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম জানান, উপজেলা বেশিরভাগ শীতের সবজি আবাদ হয় প্রাণনগর গ্রামে। এখানে মোট সবজি চাষের পরিমাণ ৭০ হেক্টর জমিতে। আগাম সবজি চাষ একটু কঠিন কাজ। চারা রোপণের পর থেকে প্রতিনিয়ত জমিতে ক্ষেত পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হয়। তাপদাহের পর বর্তমানে টানা বৃষ্টির ফলে আগাম সবজি চাষে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে শিকড়ে পচন ধরতে চারা মরে যেতে পারে। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে আমাদের কৃষক।