জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে কয়েক দিনের বৃষ্টির টানাবর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষরা কাজের সন্ধানে বাইরে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম পোহাতে হচ্ছে তাদের।
অনেকই এনজিওর কিস্তি পরিশোধে হাত বাড়াচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে। গত কয়েকদিনে টানাবর্ষণের কারণে মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের না পারায় রিকশা, ভ্যান ও অটোচালকরা পড়েছে আরো বিপাকে। সারা দিনে যা আয়-রোজগার হচ্ছে, তা দিয়ে তাদের সংসারের খরচ চালানোই দায় হয়ে পরেছে। উপজেলার আটুল গ্রামের অটোচালক মাহবুব বলেন, অতি বৃষ্টির রাস্তায় লোক চলাচল নেই। যাত্রীর অভাবে রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। সংসারের খরচ করব কি দিয়ে, আর এনজিওর কিস্তিই বা দিবো কেমনে। উচাই গ্রামের ভ্যানচালক আবু সিদ্দিক জানান, বৃষ্টির কারণে গত দুদিন ধরে কোনো আয় না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্ভোগে পরেছি। এদিকে অতি বৃষ্টির কারণে প্রকৃতিকভাবে রোপা আমন ধানের পোকা-মাকড় দমনে উপকার হলেও উপজেলা আগাম শীতকালীন সবজির খেতের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজি হিসাবে মুলা, মরিচ, সিম, লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপির খেত লাগানো হলেও জমিতে পানি জমে থাকার কারণে নষ্ট হতে শুরু করেছে।
এতে কৃষকের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামে কৃষক রোস্তম আলী বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছিলাম। এবার জমিতে ভালো মুলা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু কয়েক দিনের অতি বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকায় মুলা খেতগুলো মরে যাচ্ছে। অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। একই গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, লাভের আশায় কচু খেত তুলে আগাম মরিচ চাষাবাদ করেছিলাম। কিন্তু পানির কারণে সব সর্বনাশ হয়েছে।
উপজেলার খাসবাট্টা গ্রামের কৃষক মিনাজুল ইসলাম বলেন, এবার ২ বিঘা জমিতে আগাম বাধা কপি চাষ করেছিলাম। টানা বৃষ্টির কারণে বাঁধাকপির চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, বৃষ্টির কারণে আগাম সবজি চাষের জমি তৈরিতে বিলম্ব হবে। এছাড়া এরই মধ্যে লাগানো কপি গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, আগাম রবি শষ্য চাষ কৃষকদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এমন আগাম শষ্যের জমি থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হবে।
