ধলাই সেতুর পিলার দেবে কমলগঞ্জে যান চলাচল বন্ধ

প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. জালাল উদ্দিন, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চাতলাপুর চেকপোস্ট ভায়া শমসেরনগর সড়কে চৈত্রঘাটের (ধলাই নদীর) বেইলি সেতুটির মধ্যবর্তী পিলার আকস্মিকভাবে দেবে গেছে। ফলে সেতু দিয়ে সব যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গত মঙ্গলবার দেখা যায় সেতুর মাঝের একটি পিলার দেবে গেছে।

ফলে যান চলাচলের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি। বিষয়টি জানার পর মঙ্গলবারই সড়ক বিভাগ এই সড়ক এড়িয়ে বিকল্প সড়কে যান চলাচল করার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার চাতলাপুর চেকপোস্ট ভায়া শমসেরনগর সড়কে ধলাই সেতুর মুখে সড়ক দেবে বিশাল ফাটল দেখা দিলে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে এই সড়কে লাল পতাকা টানিয়ে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। পরে ১২ দিন চেষ্টার পর ২৯ ডিসেম্বার অস্থায়ীভাবে যান চলাচলের জন্য এখানে একটি বেইলি সেতু চালু করা হয়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না যেতেই কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক উঠে সেতুটি ভেঙে পড়ে। ফলে এই সড়কে চলাচলকারী কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।

পরে সেতুতে মেরামত কাজ করে পুনরায় গত পহেলা জানুয়ারি আবার তা চালু করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো বলেন, ১৯৮৮ সালে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট এলাকায় ধলাই নদীর ওপর ৫২ মিটার লম্বা এবং ৩ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থের ওই সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। পরে চাতলাপুর চেকপোস্ট হয়ে অসংখ্য গাড়ি যাতায়াতের কারণে গুরুত্ব বেড়ে গেলে সড়কটি অধিগ্রহণ করে মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগ। এদিকে সেতুর পিলার দেবে যাওয়ার ঘটনায় জানা যায়, মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার উভয় পাশে এক কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও এখানে প্রতিনিয়ত ড্রেজার মেশিন দিয়ে ধলাই নদীর বালু উত্তোলন করা হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতু এলাকায় অধিক বালু উত্তোলনের ফলেই নদী পাড়ের মাটি ধ্বসে পড়েছে। শুধু সেতুই নয়, নদীর পাড়ের প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গা দিয়ে ফাটল দেখা দেয়।

সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কমলগঞ্জের নয়টি ইউনিয়নের বাসিন্দা-সহ মৌলভীবাজার জেলার অন্যান্য উপজেলার বাসিন্দারা। মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, সেতুটি অনেক পুরাতন। এর আগে হঠাৎ করে মাটি ধ্বসে যাওয়ার কারণে সেতুর এপ্রোচ মেরামত করা হয়। গত মঙ্গলবার হঠাৎ সেতুটির মধ্যবর্তী পিলার আকস্মিকভাবে দেবে যায়। একাধিক বিকল্প রাস্তায় চলাচলের অনুরোধ জানাচ্ছি। এখানে নতুন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।