ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ

৪ বছর ধরে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তুলছেন নিয়মিত

৪ বছর ধরে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তুলছেন নিয়মিত

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ বছর কর্মস্থলে উপস্থিত না হয়েও প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা বেতন তোলার অভিযোগ উঠেছে আয়া মোসা: রহিমা বেগমের বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এভাবেই দায়িত্বে অবহেলা করে কোনো রকম ছুটি ছাড়াই বছরের পর বছর হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকছেন। এ জন্য তাকে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আরএমও’র বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আয়া রহিমা বেগম ১৯৯৫ সালে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়া পদে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময় চাকরিরত অবস্থায় রহিমা বেগম শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে যান।

ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও বিগত ৪ বছর ধরে শুধু বেতন ও ভাতার টাকা উত্তোলনের সময় ছাড়া নিজ কর্মস্থলে দেখা যায় না তাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডিজিটাল হাজিরার (ফিঙ্গার প্রিন্ট) আওতায় আনা হলে রহিমা বেগমের ফিঙ্গার প্রিন্ট না নিয়ে স্বামী জামাল হোসেনের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রতিদিন স্বামী জামাল হোসেন হাজিরা মেশিনে নিজের ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে হাজিরার উপস্থিতি দেখিয়ে আসছে। মূলত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বিগত ৪ বছর ধরে কোনো রকম ছুটি ছাড়াই বছরের পর বছর কর্মস্থলে না এসেও প্রতি মাসে বেতনের ২৪ হাজার টাকা ও সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা তুলে নিচ্ছেন রহিমা বেগম। আয়া রহিমা বেগমের স্বামীর বাড়ি পরমতলা গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, রহিমা বেগম অসুস্থ না। তিনি বাড়িতে থেকে বিভিন্ন কৃষিকাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। মূলত তার স্বামী জামাল হোসেন একটু অলস প্রকৃতির মানুষ শুনেছি, সেজন্য হাসপাতালের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে স্বামীকে দিয়ে তার ডিউটি করাচ্ছে। আয়া রহিমা বেগম সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আমি পায়ে ব্যথা পেয়ে প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলাম। কয়েক বছর আমার চলাফেরা করতে খুবই কষ্ট হয়েছিল। তারপর থেকে নিয়মিত চিকিৎসার ফলে বর্তমানে আমি কিছুটা ভালো। আমি প্রতিদিনই হাসপাতালের ডিউটিতে যাই, অসুস্থতার কারণে আমি কাজ করতে পারি না বিধায় আমার স্বামী আমার উপস্থিতিতে কাজে সহযোগিতা করেন।

তবে স্বামী জামাল হোসেন স্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে বলছেন ভিন্ন কথা তিনি বলেন, আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে পিঠের ব্যথা নিয়ে খুবই অসুস্থ। পরে আমি বড় স্যারদের হাতে পায়ে ধরে তার উপস্থিতিতে সব কাজ করার অনুমতি নিয়ে আমি সব কাজ করি। মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক অনুপস্থিত থাকা ও ডিজিটাল হাজিরা মেশিনে স্বামী-স্ত্রীর দুইজনের ফিঙ্গার প্রিন্ট থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি এখানে দায়িত্ব নেয়ার পর রহিমা বেগমের বিষয়টি জানতে পারি। আমি আসার পর রহিমার ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়েছি। আসলে আমার আগে যে কর্মকর্তারা ছিলেন তারা নাকি রহিমা বেগমের অসুস্থতার কথা জেনে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রহিমা বেগমের অনুপস্থিতিতে স্বামীকে দিয়ে ডিউটি করার অনুমতি দিয়েছিলেন। তার পরেও বিষয়টিকে আমি যাচাই-বাছাই করে গুরুত্বসহকারে দেখছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত