ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারের প্রবণতা বেড়েছে

সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারের প্রবণতা বেড়েছে

গত এক দশকে সুন্দরবনের নদী খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি পেয়েছে। বন বিভাগের নজরদারী উপেক্ষা করে অসাধু জেলেরা প্রতিনিয়ত রাসায়নিক রিপকর্ড বিষপ্রয়োগ করে চিংড়ি ও অন্যান্য প্রজাতির মাছ নিধন করতে তৎপর রয়েছে। এক্ষেত্রে জেলেরা নিষিদ্ধ ভেষালি জাল ও ঘন ফাঁসের চরপাতা জাল ব্যবহার করছে। বন বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বন বিভাগের পক্ষ থেকে জোরেসোরে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে সুন্দরবনের নদী খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করা যাবে না। বনাঞ্চলের নিকটবর্তী লোকালয়ের হাট-বাজার ও জনসমাগমের স্থানগুলোতে বন কর্মকর্তারা সভা-সমাবেশ করে সাফ জানিয়ে দেন কেউ বিষ দিয়ে মাছ শিকারের চেষ্টা করলে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হবে। কিন্তু অসাধু জেলেরা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে বনের ভেতরের খাল ও ভারানীতে বিষ দিয়ে মাছ শিকার অব্যাহত রেখেছে। জেলা ও উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে সুন্দরবনে বিষপ্রয়োগে মাছ শিকারের বিষয়টি সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক প্রশাসনের নজরে আনেন। গত জুন, জুলাই ও আগস্ট তিন মাস সুন্দরবনে সকল ধরনের পাস পারমিট বন্ধ ছিল। বন্ধকালীন সময়ে শত শত জেলে বন বিভাগের নজরদারী উপেক্ষা করে গহিন বনের মধ্যে ঢুকে বিষ দিয়ে নিষিদ্ধ ভেষালী জালে বিপুল পরিমাণ চিংড়ি মাছ শিকার করে। অভিযানে মণ মণ চিংড়ি আটক করা হয় এবং আটককৃত জেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় বন বিভাগ, পুলিশ ও কোস্টগার্ড। উদ্ধার হওয়া চিংড়ি আদালতের নির্দেশে মাটিতে পুতে বিনষ্ট করা হয়েছে। বর্তমানে বনাঞ্চল সংলগ্ন জোড়শিং, পাতাখালি, আংটিহারা, গোলখালি, ঘড়িলাল, গাবুরা, পারশেমারি, চাঁদনিমুখা, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জ, হরিনগর, হরিহরপুর, কাটকাটা, পাথরখালি, ৬নং কয়রা, ৫নং কয়রা, ৪নং কয়রা, পল্লীমঙ্গল, মঠবাড়ি, তেতুলতলা, খোড়লকাটি, মহেশ্বরীপুর, হড্ডা, নলিয়ান, কালাবগি, সুতারখালি, গড়ুইখালি এলাকার অসাধু জেলেরা বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে আর্থিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোড়শিং গ্রামের দুই জেলে জানিয়েছে গোনের শুরুতে ৪ থেকে ৫ দিন বিষ দিয়ে মাছ শিকার করা হলে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। আর্থিক লাভের আশায় ৭০ শতাংশ জেলে সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে বলে তারা জানায়। এ ব্যাপারে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মো. মহসিন হোসেন জানান, বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধ করতে বন বিভাগের নানামুখী পদক্ষেপ ইতিবাচক পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত