ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কুষ্টিয়ায় পেঁপে চাষে হাফিজুলের ভাগ্যবদল

কুষ্টিয়ায় পেঁপে চাষে হাফিজুলের ভাগ্যবদল

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া এলাকার কৃষক হাফিজুল ইসলাম। ৯ম শ্রেণির গোন্ডি পেরিয়ে ইতি হয় লেখাপড়ার। তারপর থেকে কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কৃষি অফিসের পরামর্শে এ বছর শাহি জাতের পেঁপে চাষ করে বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। মাত্র ১ বিঘা জমিতে ১ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রয় করে এলাকার কৃষকদের মাঝে সাড়া ফেলেছেন তিনি। হাফিজুল এখন এলাকার অন্য চাষিদের কাছে মডেল। তার পুরো বাগানটি যেনো চোখ জোড়ানো এক খেত। গাছের মাঝ থেকে ডগা পর্যন্ত ছোট, মাঝারি, বড় আকারের পেঁপে ধরে রয়েছে। হাফিজুলের সাফল্য দেখে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন এই পেঁপে চাষে। গতকাল সোমবার সকালে হাফিজুলকে দেখা যায়, তার পেঁপের বাগানে কাজ করতে। পুরো বাগান ঘুরে দেখা যায় এ যেনো গাছে টাকা ধরে রয়েছে। এক একটি গাছে প্রচুর পরিমানে পেঁপে। ৪ দিন আগেও তিনি ৬০ মণ পেঁপে বিক্রি করেছেন তার ২২ কাঁঠা জমির পেঁপে বাগান থেকে। কথা হয় হাফিজুলের সঙ্গে। তিনি জানান, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলাম আমি। পরিবারের টাকার অভাবে লেখাপড়া করতে পারিনি। মাঠের চাষাবাদ শুরু করি। তারপরে এলাকার অন্য চাষিদের মতো তামাকের চাষ শুরু করি। একসময় দেখি তামাকে একসঙ্গে টাকা পাওয়া যায় ঠিকই; কিন্তু প্রচুর কাজ করতে হয়। আর বাড়ির সবাই মিলে এত কাজের পরেও বিক্রি করলে খুব একটা লাভ হয় না।’

তিনি বলেন, ২০১৯ সালের মে মাসে আমাদের চিথলিয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার সুকেশ রঞ্জন পাল আমাকে পেঁপে চাষ সম্পর্কে পরামর্শ দেন। কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে এ পেঁপের চাষ করা যায় সেটা সম্পর্কে জানি। পরে কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করি পেঁপে চাষ। সেময় এই পেঁপে চাষ সম্পর্কে অনেকেই অনেক কথা বলত। তিনি বলেন, গত বছর ২ বিঘা জমিতে পেঁপের চাষ করি। বিঘাপ্রতি আমার ২০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছিল। আর প্রায় ৯০ হাজার টাকার বেশি বিঘাপ্রতি পেঁপে বিক্রি করেছিলাম। তিনি বলেন, এ বছর আমি ৮ বিঘা জমিতে হাইব্রিড শাহি জাতের পেঁপের চাষ করেছিলাম। অতিরিক্ত বৃষ্টি আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমার ৭ বিঘা জমির পেঁপে গাছ নষ্ট হয়ে যায়। সবে মাত্র একেক গাছে ৬ থেকে ৭ কেজি করে পেঁপে হয়েছিল। বৃষ্টির কারণে গাছগুলো মরে গেল। তবে সে ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে আমার এই ২২ কাঁঠা জমির পেঁপেতেই। তিনি বলেন, বাজারে পেঁপের যে দাম তাতে খুবই লাভ। আগে ৩ থেকে ৪ টাকা কেজি পেঁপে বিক্রি করেছি। তারপরেও লাভ হয়েছে। এখন তো মাঠ থেকেই পাইকারি বিক্রি করছি ২০ টাকা কেজি দরে। বর্তমানে আমার ২২ কাঁঠা জমিতে ৪৩০-৪৪০টি পেঁপে গাছ আছে। এরই মধ্যে ৪০টি রয়েছে পুরুষ গাছ। বাকি সব গাছগুলোতে বেশ ভালো পেঁপে ধরেছে। খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকার মতো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত