সুন্দরবন পর্যটকে মুখরিত

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

পর্যটকদের উপস্থিতিতে আবারো মুখরিত হয়ে উঠেছে সুন্দরবন। দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর বনজীবী ও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবনের দুয়ার। ১ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে শুরু করেছেন। একইসঙ্গে অভাব অনটনে পড়ে থাকা বনজীবীরাও তাদের কষ্ট ভুলে আবারো নতুন উদ্যমে সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া আহরণের জন্য বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের ভেতরে প্রবেশ শুরু করেছেন। এর ফলে স্বস্তি ফিরেছে সাতক্ষীরার সুন্দরবননির্ভর মানুষের মধ্যে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ও মাছের প্রজনন বাড়ানোর লক্ষ্যে গত পহেলা জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদীতে মাছ ও কাঁকড়া ধরাসহ পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি পাওয়ায় পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনজিএফের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সাতক্ষীরার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হওয়ায় একদিকে যেমন সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে অন্যদিকে সুন্দরবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পেশার মানুষের আয় বাড়বে। সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, দীর্ঘ তিন মাস পর পাস পারমিট দেওয়া শুরু হয়েছে। এতে জেলেদের পরিবারে সুবাতাস বইবে। দুপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন শত পাস পারমিট দেওয়া হয়েছে। আরো বাড়তে পারে। আমরা নিয়মনীতি মেনে জেলেদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি। প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণবিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ জানান, আবার বাদাবন বনজীবীদের জন্য খুলে দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ। বন্ধ বাদার সময়গুলোতে মৌয়ালি, বাওয়ালি, জেলে, বাগদী, মুন্ডা পরিবারগুলো অনাহার অসুস্থতা আর অনিশ্চয়তায় যেভাবে দিন কাটায় তা অবর্ণনীয়। কোনো গবেষণা ছাড়া, বননির্ভর জনগোষ্ঠীর মতামত ছাড়া বারবার কেন সুন্দরবন বন্ধ করা হচ্ছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। আমি সুন্দরবন এলাকায় বহু গ্রামে বহু বনজীবীদের কথা শুনেছি। এভাবে বাদা বন্ধ করে বনজীবীদের সঙ্গে সরকারের মানসিক দূরত্ব বাড়ছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য সনদ স্বাক্ষর করেছে। এই সনদে প্রথাগত অধিকার ও লোকায়ত জ্ঞান স্বীকৃত। একমাত্র প্রথাগত বনজীবী ছাড়া আর কাউকে সম্পদ সংগ্রহের পাস পারমিট দেওয়া যাবে না। বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য, প্লাস্টিক দূষণ, কারখানা সম্প্রসারণ কিংবা লবণাক্ততার জন্য সুন্দরবন প্রতিনিয়ত ঝুঁকিতে আছে। বনজীবীরা কিন্তু এই ঝুঁকির জন্য দায়ী না।