সিকিমে বাঁধ ভাঙন

তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আরিফুর রশীদ, লালমনিরহাট

ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা অংশে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ভারি ঢল ধেয়ে আসছে। এতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বন্যার শঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এতে আতঙ্কিত তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ও সার্বিক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন।

নদীপাড়ে রেডএলার্ট জারি করে মাইকিং করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় তিস্তা অববাহিকায় সতর্কতা জারি করে মাইকিং করা হয়েছে। সেই সাথে চর ও নদীপাড়ের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল বিকাল ৪টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি।

ফলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা চরের নিম্নাঞ্চলের মানুষ আরেকবার বন্যার আশঙ্কা করছেন। গতকাল বিকাল ৪টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। এর আগে সকাল ৯টা থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য জানায়, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এছাড়া রংপুর অঞ্চলসহ লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এলাকায় রাত থেকেই বৃষ্টি চলছে। তিস্তার বাম ও ডান তীরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলে মৌসুমি ফসলসহ খেত-খামারের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে সতর্কবার্তা দিয়ে বন্যা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিআর সারোয়ার বলেন, আমরা নদী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাইকিং করে ও বিভিন্নভাবে নদী এলাকার মানুষকে সচেতন করতে বলেছি। আমি সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লোকজনদের পশুপাখিসহ প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ভারি ঢলে তিস্তায় আবারও বন্যা দেখা দেবে। আমরা সার্বিক খোঁজখবর রাখছি।