ফসলরক্ষায় আলোর ফাঁদ

প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

দিন শেষে যখন চারদিকে অন্ধকার নেমে আসে, ঠিক তখনি ফসলের মাঠে জ্বলে উঠে আলো। আর এ আলোর আকর্ষণে উড়ে আসে ক্ষতিকর সব পোকা-মাকড়। তারপর আলোর নিচে পেতে রাখা ডিটারজেন্ট ভর্তি পানির পাত্রে পড়ে প্রাণ হারায়। এতে দমন হচ্ছে ক্ষতিকর পোকা-মাকড়। একই সঙ্গে কমেছে কিটনাশকের ব্যবহার। পরিবেশের ওপর প্রভাব না ফেলে কষ্টের ফসল নিরাপদে ঘরে তোলার জন্য ব্যবহৃত এ ফাঁদকে বলা হয় ‘আলোর ফাঁদ’। কোনো রকম কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না বলে পরিবেশের ওপর পড়ে না বাড়তি চাপ। এতে অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হবেন কৃষক। ক্ষতিকর এসব পোকা-মাকড় দমনে নানান রকম উপকরণ থাকলেও সেগুলো সবসময় কাজে আসে না। কিন্তু ‘আলোর ফাঁদ’ শতভাগ নিরাপদ এবং কার্যকর হওয়ায় কৃষক বেশ লাভবান হবেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বোরো ধান রক্ষায় সব ব্লকেই আলোর ফাঁদ বসিয়ে ক্ষতিকর পোকা-মাকড় চিহ্নিতকরণ কার্যক্রম শুরু করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষক মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, প্রতি বছর কিটনাশকের জন্য অনেক টাকা খরচ করতে হয়। এবার কৃষি অফিস থেকে কীভাবে আলোর ফাঁদের মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকা চিহ্নিত করতে হয় তা শিখিয়ে দিয়েছেন। এ পদ্ধতি ব্যবহারে পোকা-মাকড় সহজেই ধ্বংস করা যাবে বলে আশা করছি। বাঙ্গাল হাওলা এলাকার কৃষাণি জসলিন গমেজ বলেন, কৃষি অফিস থেকে আলোর ফাঁদের মাধ্যমে কীভাবে পোকা চিহ্নিত করে তা নিধন করতে হয় তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমি পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। এভাবে পোকার হাত থেকে ফসল রক্ষা করে অধিক ফলনের আশা করছি আমরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, ক্ষতিকর পোকা-মাকড়ের হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করতে উপজেলার সবকটি ব্লকের কৃষকদের আমরা হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এ পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার করা গেলে কৃষক লাভবান হবে। একই সঙ্গে আমাদের প্রকৃতিও বেঁচে যাবে। কিটনাশক ব্যবহারের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে উপকারী পোকা-মাকড়গুলো বেঁচে যাবে। আশা করছি এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে।