হাজারো পাখির বন্ধু হোটেল মালিক জয়ন্ত

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এসএম রায়হান. ঝিনাইদহ

প্রায় দুই যুগ ধরে হাজারো পাখির বন্ধু হোটেল মালিক জয়ন্ত। শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবতা দেখলে যে কেউ বিস্মিত হবে। খেতে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ গাছ-ও গাছ, এ ছাদণ্ডও ছাদ থেকে যে যেখানে আছে সবাই চলে আসে উড়ে। এমনই ভিন্ন রকমের ভালোবাসা দেখে পথিকও দাঁড়িয়ে যায় কিছু সময়ের জন্য । ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ব্যস্ততম গাড়াগঞ্জ বাজারের। সরেজমিন দেখা যায়, ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই পাখিগুলোর অপেক্ষা কখন আসবে তাদের বন্ধু। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জে অবস্থিত ঘোষ সুইটস এর মালিক মিলন ঘোষের ছেলে জয়ন্ত ঘোষ এসেই শুরু করেন খাবার দিতে। যেখানে একটি কাক-পক্ষিও ছিল না হঠাৎ করে নেমে আসতে শুরু করে হাজারো পাখি। কিচিরমিচির শব্দে যুদ্ধ শুরু হয় খাবার খাওয়ার। এ ঘটনা চলতে থাকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী। হাজারো ‘গাঙ শালিক’ একসঙ্গে নেমে পড়ে। রাতে হোটেলের বেঁচে যাওয়া রুটি, পরোটা ছিড়ে ছিটিয়ে দিলেই চলে খাবার খাওয়ার এ মহোৎসব। সাধারণ মানুষও চলতে পথে এমন দৃশ্য দেখে না থেমে পারেন না। তারাও উপভোগ করতে থাকেন এ বিরল দৃশ্য একপলক দেখার অপেক্ষায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোথায় যেন হারিয়ে যায় গাঙ শালিকের দল।

এলাকাবাসী সম্রাট হোসেন জানান, এমন দৃশ্য আমরা খুব কমই দেখতে পাই। পাখির প্রতি মানুষের এমন বিরল ভালোবাসা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। অত্যন্ত ব্যস্ততম এ বাজারে মানুষের কোলাহলের সঙ্গে পাখির এমন বন্ধুত্ব সবাইকে অবাক করে। ৭০ বছরের কিরামত আলী জানান, এ ঘটনা প্রায় ২০ বছরের উপরে ধরে দেখে আসছি। আমরা অবাক হয়ে যায় পাখির প্রতি মানুষের এমন বিরল ভালোবাসা দেখে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওরা কোথায় যে হারিয়ে যায় তা আজও জানা যায়নি। তবে ভোর হলেও চলে মিলন মেলা। শৈলকুপা গাড়াগঞ্জ বাজারের ঘোষ সুইটসের স্বত্বাধিকারী জয়ন্ত ঘোষ জানান, আমার বাবা-চাচারা ২০ বছরের উপর এ পাখির খেদমত করে আসছে। এখন আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। একসময় পাখি কম আসলেও এখন দিনের পর দিন পাখির সংখ্যা বাড়ছে। হাজারো পাখির মিলনমেলা দেখতে ভালোই লাগে।