অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি হলো বাঁশের সাঁকো

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কামরুল হুদা হেলাল, দিনাজপুর

২০১৭ সালে বীরগঞ্জের আত্রাই সংলগ্ন নালার উপর নির্মিত কাঠের ব্রিজটি বন্যায় ভেঙে গেলেও দীর্ঘদিন নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ শুরু করেছে। কেউ নগদ টাকা, কেউবা নিজের বাগানের বাঁশ, আবার কেউবা শ্রম দিয়ে ব্রিজ নির্মাণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী কাশিমনগর গ্রামের কাচারীপাড়া আত্রাই নদীসংলগ্ন নালার উপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণের অংশগ্রহণ করেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে নালাটির উপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ২০১৭ সালের বন্যায় ব্রিজটি ভেঙে গেলে চরম দুর্ভোগে পড়ে কাশিমনগর গ্রামের কাচারীপাড়ার আনুমানিক ৫০টি পরিবার। এখানে একটি স্থায়ী সেতু মেরামতের দাবি জানিয়ে কোনো কাজ হয়নি। তাই শুক্রবার সকালে নিজ উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে বাঁশে সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন এলাকাবাসী।

সাঁকো নির্মাণের উদ্যোক্তা মো. মজিদুল ইসলাম জানান, নালার উপর নির্মিত একমাত্র কাঠের ব্রিজটি ২০১৭ সালে বন্যায় ভেঙে যায়। এরপর এলাকাবাসী এখানে স্থায়ীভাবে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ব্রিজ নির্মাণে কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বর্ষাকালে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে মানুষ পারাপার করা হয়। এতে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। গত সপ্তাহে স্থানীয় বাসিন্দা দুদু মিয়ার স্ত্রী মোছা. সোনিয়া তার ৬ মাসের শিশু নিয়ে কলাগাছের ভেলায় পারাপারের সময় পানিয়ে পড়ে যায়। উপস্থিত লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করলে প্রাণে বেঁচে যান তারা। সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দা সাকিল আহম্মেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নালার উপর একটি ব্রিজের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু ভোটের সময় সবাই কথা দিলেও ভোটের পর আর কারো দেখা মেলে না। এই নালাটি ব্রিজ না থাকায় মানুষ পারাপারসহ কৃষি পণ্য নিয়ে চরম ভোগান্তি কাচারীপাড়া এলাকার ৫০টি পরিবারের। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী নিয়ে যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্রিজ না থাকায়। কয়েকদিনের টানাবর্ষণে নালাতে পানির স্রোত বেড়ে গেছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তাই নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ শুরু করেছে। শতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম জানান, যেহেতু আমাদের কালভার্ট তৈরি করার মতো বাজেট দেওয়া হয়, তাই সেখানে ব্রিজ তৈরি করার মতো সামর্থ্য থাকে না। তবে ইউনিয়ন পরিষদের পরিকল্পনা সভায় উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমি বিষয়টি উপস্থাপন করেছি। আশা করা যায়, চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।