ঢাকা ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় ভূমি অফিসে সেবা গ্রহীতাদের ভোগান্তি চরমে

ঘুষ না দিলে নড়ে না ফাইল
নওগাঁয় ভূমি অফিসে সেবা গ্রহীতাদের ভোগান্তি চরমে

নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি-শৈলগাছী-শিকারপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন ও রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে খাজনা-খারিজের নামে সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নির্ধারিত ফি বাইরে অতিরিক্ত টাকা না দিলে কোনো কাজই করেন না তারা। সেবাপ্রত্যাশীরা হয়রানি থেকে রেহাই পেতে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কাজ করে নিতে বাধ্য হন। এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে পরিত্রাণ পেতে চান সাধারণ মানুষ। জানা গেছে, লাগামহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির করছেন ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন এবং রাসেল হোসেন। খাজনা খারিজের নামে সাধারণ সেবাপ্রত্যাশীদের কাছে থেকে নেওয়া হচ্ছে গলাকাঁটা ফি। কোন সেবাপ্রত্যাশীরা তাদের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছেন না। ভূমি অফিসের প্রসেস সার্ভেয়ার ছালমা খাতুনের মাধ্যমে এসব টাকা নিয়ে কাজ করেন তারা। গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কাজ শেষে বেরিয়ে যাচ্ছেন চকপ্রাসাদ গ্রামের খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, আমার সামান্য কেনা জমির খারিজ করার জন্য আসছিলাম। এখানে ফাতেমা ম্যাডামের সঙ্গে কথা হলে তিনি সব কাগজপত্র ঠিকঠাক করে দিয়ে বলেন ৮ হাজার টাকা খরচ পড়বে। পরে আমি ৭ হাজার টাকা দিয়ে কাজ করে নিয়েছি। দুবলহাটি ইউনিয়নের ভরাট্ট গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, আমার জমির খাজনার চেক কাটতে আসছিলাম। ফাতেমা খাতুন বলেন ১ হাজার টাকা লাগবে পরে ১০০ কম দিয়ে ৯০০ টাকা দিয়েছি। কিন্তু আমাকে চেক দিয়েছে ২৭২ টাকার। আমারা তো এত বুঝি না যা চায় দেয়া লাগে না হলে কাজ করে দেয় না। উপ-সহকারী কর্মকর্তা রাসেল এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শিকারপুর ইউনিয়নের গোয়ালী গ্রামের মো. সাবু বলেন, আমি গত ১ মাস থেকে ঘুরছি। আমার একটা হোল্ডিং অনুমোদনের জন্য রাসেলকে ১ হাজার টাকাও দিয়েছে। কিন্তু আমার কাজটা করে দিচ্ছে না। আজ এখানে কাল সেখানে সরকারি কাজে ব্যস্ত আছি বলে ঘুরানো হচ্ছে। মাতাসাগর গ্রামের মহির উদ্দীন নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, এখানে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। সামান্য একটা খারিজ করতে আসলে যেখানে সরকারি ফি ১ হাজার ১৫০ টাকা সেখানে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা ছাড়া কাজ করে না। এত অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়, যেন দেখার কেউ নেই। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ফাতেমা খাতুন বলেন, কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তিনি বলেন, আপনার যা করার করতে পারেন। তবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। যারা বলছে তাদের ডেকে নিয়ে আসেন। ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা রাসেল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলতে চান না। অফিসে গিয়ে সাক্ষাতে কথা বলেন। দুবলহাটি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টা আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে সেটা দেখব। তাছাড়া মানুষ বেশি টাকা দেয় কেন, না দিলেই তো হয়। নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম রবিন শীষ বলেন, ভূমি অফিসে সরকারি ফির বাইরে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ অভিযোগ করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত