দিনাজপুরে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কামরুল হুদা হেলাল, দিনাজপুর
চলতি রবি মৌসুমে দিনাজপুরে আলু আবাদে অধিকাংশ কৃষক ঝুঁকে পড়েছেন। খুচরা ও পাইকারি বাজারে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় এবার চাষিরা আলুতে লাভের মুখ দেখেছেন। আর সে কারণে রবি মৌসুমে আলু আবাদের জমি লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা। এ বছর জেলার ১৩টি উপজেলায় সাড়ে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১১ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দিনাজপুরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নুরুজ্জামান বলেন, গত বছর দিনাজপুরে আলুর ফলন লক্ষমাত্রার চাইতে অতিরিক্ত আবাদ হয়েছিল। খোলা ও পাইকারি বাজারে আলুর ঊর্ধ্বমুখী চড়া দামের জন্য কৃষক যেমন ভালো দাম পেয়েছে তেমনি ফড়িয়া ও ব্যবসায়ীরাও মুনাফার মুখ দেখেছেন। তিনি বলেন, সে কারণে চলতি রবি মৌসুমে আলুর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অধিক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। এ বছর কৃষি বিভাগ সাড়ে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে ১১ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন জাতের আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন। তিনি বলেন, কৃষক অধিক মুনাফার কারণেই আলু চাষের প্রতি অধিকতর আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এরই মধ্যে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু আবাদ করা হয়েছে। গত ক’দিনের টানা ও ভারি বর্ষণের ফলে আলু আবাদে কিছুটা ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। তা না হলে আগাম আলু আবাদের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ত। তিনি বলেন, এবার আলু বীজ সংকটের আপাতত আশঙ্কা করা যায় না। কেন না, অনেক অবস্থাপন্ন কৃষক ভালো জাতের খাওয়ার আলু বীজ হিসেবে রোপণ করেছেন। প্রতি হেক্টরে আবাদের জন্য ১ হাজার ৫০০ কেজি আলু বীজের প্রয়োজন হয়। দিনাজপুরের পাশাপাশি জয়পুরহাট, মুন্সীগঞ্জ, বগুড়া ও রংপুর জেলা থেকেও কৃষকরা আলু বীজ নিয়ে আসেন। আর সে কারণে আলু বীজের কোনো সংকট হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। দিনাজপুরের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১৩টি হিমাগারে বীজ আলু মজুত ছিল ৫১ হাজার ৫৯১ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বীজ আলু খালাস করা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন। কৃষক আলু আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত রবি মৌসুমে আলু আবাদের সময়সীমা থাকার পরও কৃষক আগাম আলু চাষে অধিকতর আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আবহাওয়া সূত্রে জানা যায়, আর কোনো ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা নেই। দিনাজপুরে আশ্বিনের শেষের দিকে কুয়াশাসহ শীতের আগমনি বার্তা বয়ে যাওয়ায় কৃষক মনে করছেন আলু চাষের জন্য এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকবে। আর সে কারণে এবার দিনাজপুরে আলুর বাম্পার ফলনের প্রচুর সম্ভাবনা।