ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বগুড়ায় বিরল প্রজাতির হুদহুদ পাখি উদ্ধার

বগুড়ায় বিরল প্রজাতির হুদহুদ পাখি উদ্ধার

বগুড়ার শেরপুরে বিরল প্রজাতির একটি হুদহুদ পাখি উদ্ধার হয়েছে। গত বুধবার দুপুরের পর উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের কালিয়াকৈর গ্রামের ফসলি মাঠে অসুস্থ অবস্থায় মাটিতে হাঁটাহাঁটি করছিল পাখিটি। একপর্যায়ে ওই গ্রামের জামাই আব্দুল কাদের সেখের চোখে বিষয়টি ধরা পড়ে। তিনি পাখিটির কাছে গেলে উড়তে চেষ্টা করেও পারছিল না। এমন অবস্থা দেখে নান্দনিক ওই হুদহুদ পাখিটিকে ধরেন আব্দুল কাদের সেখ। সেই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী বেসরকারি সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’র কর্মীদের খবর দেন। পরে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাছিমসহ তার সংগঠনের কর্মীরা সেখানে গিয়ে পাখিটিকে হেফাজতে নেয়। এ সময় জানতে চাইলে স্বাধীন জীবনের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাছিম বলেন, তারা পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন, জমিতে কীটনাশক প্রয়োগের প্রভাবে ঐতিহাসিক এই পাখিটি ভিষণ দুর্বল হয়ে পড়ে এমন অবস্থা হয়েছে। উদ্ধারের পর পাখিটিকে সেবা শুশ্রƒষা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ ও স্বাভাবিক হলে পাখিটিকে অবমুক্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, জমিতে যখন ইচ্ছা তখন নানা রকম কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়।

ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সেইসঙ্গে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি। এই নান্দনিক পাখিটি এলাকায় কালেভদ্রে দেখা মেলে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নাছিম বলেন, পরিযায়ী ‘হুদহুদ’ পাখিটি নবী সোলায়মান (আ.) এর সংবাদ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে পবিত্র কোরআনের সুরা নামলে উল্লেখ রয়েছে। আরব দেশগুলোতে এই পাখি হুদহুদ নামে পরিচিত হলেও বাংলাদেশে এই পাখি ‘মোহনচূড়া’ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া বেশ কয়েকটি দেশের জাতীয় পাখিও এটি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাখিটির রং বাদামি। ডানা ও লেজে সাদা ও কালো দাগ। কালচে দীঘল ঠোঁট কিছুটা বাঁকা। মাথায় সুন্দর হলদেটে ঝুঁটি। বাদামি পালকের মাথায় কালো রং। কিছুটা পরিচর্যার পরই বিরল প্রজাতির পাখিটি সুস্থ হয়ে উঠছে। জানা যায়, হুদহুদ পাখি বসবাসের জন্য মরুভূমি-লাগোয়া এলাকা পছন্দ করে। তবে নির্জন নদীর পাড়, আবাদি ও পতিত জমি, খোলা শুকনো মাঠেও বেশ বিচরণ করে এই পাখি। ইতিহাসের পাখি হিসেবে পরিচিত হুদহুদ পাখি আকারে ছোট হয়। সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। উত্তেজিত হলে ঝুঁটি প্রসারিত করে তারা। বিভিন্ন ফল ছাড়াও কাস্তের মতো বাঁকা কালচে ঠোঁট মাঠের গর্তে ঢুকিয়ে পোকামাকড় বের করে খায় এরা। ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফেলে বলে ফসলের জন্য উপকারী পাখি বলেও মনে করা হয় হুদহুদকে। এই পাখির প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে জুন। বাসা বানিয়ে ডিম দেয় চার থেকে পাঁচটি। স্ত্রী পাখি ডিমে ১৮ থেকে ২০ দিন তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায় বলে বিভিন্ন গ্রন্থে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত