ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঈশ্বরগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

বিলীনের পথে বসতবাড়ি ফসলি জমি

বিলীনের পথে বসতবাড়ি ফসলি জমি

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই দেখা মিলবে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে অবস্থিত শস্য ভান্ডার খ্যাত চরাঞ্চল রাজিবপুর ইউনিয়ন। এ চরাঞ্চলের উৎপাদিত ফসল ঈশ্বরগঞ্জবাসীর চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যায়। কিন্তু এক সময়ের প্রবহমান ব্রহ্মপুত্র নদী বালুখোরদের দাপটে হারিয়েছে তার চিরচেনা রূপ। নদী বিলীন করে এবার সেই বালুখোররা নেমেছে চরাঞ্চল মানুষের ফসলি জমি ও বাড়ি ভিটে বিলীন করতে। অভিযোগ রয়েছে রাজিবপুর ইউনিয়নের ভাটি চর নওপাড়া গ্রামে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনের কারণে বিলীন হয়ে গেছে অনেক ফসজি জমি। অনুমতি ছাড়া পুকুর খননের আড়ালে বালু বিক্রি করার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বিপুলসংখ্যক কৃষি জমি। সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ভাঙনের মুখে পড়েছে প্রায় ২০ পরিবারের বাড়ি ভিটে। বাড়ি ভিটে ভাঙনের শঙ্কায় এই পরিবারগুলোর মাথায় এখন হাত পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে গভীর করে বালু ও মাটি উত্তোলন করায় পাড় ভেঙে কৃষি জমি, গাছপালা এরই মধ্যে ভেঙে গেছে। পরিবারগুলোর বসতবাড়িও এখন ভাঙনের মুখে পড়েছে। এতে করে জমি ও বাড়ি ভিটে নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে অনেক কৃষক। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বালু ব্যবসায়ী মো. দুলাল মিয়া (৫৫)-এর নামে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। দুলাল একই গ্রামের মৃত নূর বকসের ছেলে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের দাবি, তাদের ফসলি জমি ও বাড়ি ভিটেসহ ৫০ শতাংশের বেশি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ। ক্ষতিগ্রস্ত মো. সুমন মিয়া (৩০), মো. সাইদুল ইসলাম (৩৫) ও মো. আরফান আলী জানান, গত ১৫-২০ দিন আগেও দুলাল মিয়া আবার ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তলন করতে আসে। তখন আমরা বাঁধা দেই, এ সময় তারা আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তাকে সেল্টার দেয় ইউনিয়ন যুবসংহতির সভাপতি ইউসুফ আলী। হুমকির বিষয়ে যুবসংহতির ইউসুফ আলীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন। কৃষাণী মোসা. হাজেরা খাতুন (৫৫) ও সেলিনা বেগম (৫০) বলেন, এই জমিগুলোতে তরিতরকারি মাড়াই করে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার চলত। এখন আমরা খুব বেকায়দায় আছি। আমরা আমাদের কৃষিজমি আগের মতো দেখতে চাই। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. দুলাল মিয়া বলেন, ২০০৫ সালে আমি নিজের জায়গায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করেছিলাম মাছের ব্যবসা করার জন্য। পরে পুকুরের পাড়গুলো আস্তে আস্তে ভেঙে যায়। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির কারণে তাদের আরো কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তলন করে বিক্রি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পুকুরে মাছের ব্যবসা করি, বালু উত্তলন বা বিক্রি করি না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত