ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভাঙনকবলিত এলাকা এখন পর্যটন কেন্দ্র

ভাঙনকবলিত এলাকা এখন পর্যটন কেন্দ্র

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পদ্মার ভাঙন রোধে নদী শাসন বাঁধ ও পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধীনে নদীর পাড়ে নির্মিত হয়েছে ১০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, যার নাম রাখা হয়েছে ‘জয়বাংলা এভিনিউ’। এটি এখন ভ্রমণপ্রেমী মানুষের অনন্য ঠিকানা। ‘জয় বাংলা এভিনিউ’ এখন হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর। বিশেষ করে নড়িয়ায় নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধে প্রতিদিন ভিড় জমছে হাজারো দর্শনার্থীর। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ‘জয়বাংলা এভিনিউ’তে কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, আবার কেউ বন্ধুদের সঙ্গে দল বেধে। জয়বাংলা এভিনিউ সৌন্দর্যের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়ছে পদ্মার স্বচ্ছ জলরাশি। ইট-পাথরের নগরজীবন থেকে মুক্ত পরিবেশে পদ্মাপাড়ে এসে উচ্ছ্বসিত দর্শনার্থীরা। বাঁধের ব্লকের ওপর হেঁটে বসে পদ্মার পানিতে পা ভিজিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন তারা। পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যকে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে যে-যার মতো ছবি তুলছেন। পর্যটকদের বাহারি খাবার জোগান দিতে এরইমধ্যে এখানে গড়ে উঠেছে ছোটবড় অসংখ্য খাবারের দোকান। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ঢাকার হাতিরঝিলের সেতুর আদলে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই কিলোমিটার অংশে খাল খনন করা হচ্ছে। ঐ অংশ দৃষ্টিনন্দন করার জন্য খালের দুই দিকে ব্লক দিয়ে সাজানো হয়েছে। ঘুরতে আসা মানুষদের বসে সময় কাটানোর জন্য বসানো হয়েছে বেঞ্চ। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার সময় ল্যাম্পপোস্টে জ্বলে উঠে আলো। এসময় সেখানে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এখান থেকেই পদ্মা সেতুর ল্যাম্পপোস্টের আলো দেখা যায়। ঢাকা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন শরীফ আহম্মেদ তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দেখার পর পদ্মার তীরে দাঁড়িয়ে নির্মল পরিবেশে সময় কাটিয়েছি। পরিবেশটা অসম্ভব সুন্দর লেগেছে। এমন পরিবেশ ফেলে ফিরতে মন চাইছিল না। স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া জানান, পদ্মাপাড়ে ঘুরতে আসা লোকজনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। হোটেলগুলোতে পদ্মার ইলিশের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে ঘুরতে আসা লোকজন এখানে বসে ইলিশ ভাজা খেতে পছন্দ করেন। নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নজরে রাখার জন্য নড়িয়া পৌরসভা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে যুক্ত করা হয়েছে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জয়বাংলা এভিনিউ রক্ষা বাঁধের মাধ্যমে পদ্মার ভাঙন রোধে কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ দশমিক ২ কিলোমিটার নড়িয়ার জয়বাংলা এভিনিউর কাজ ২০২৩ এর জুন মাসে শেষ হয়েছে। চরত্রা, নওয়াপাড়া ও কাচিকাটায় ৫৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ দশমিক ৫ কিলোমিটার স্বাধীন বাংলা এভিনিউ নামের রক্ষা বাঁধের কাজও শেষের দিকে। সখিপুরের উত্তর তারাবুনিয়ায় ৫৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার সোনার বাংলা এভিনিউ রক্ষা বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত