ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কমছে কীটনাশকের ব্যবহার

জনপ্রিয় হচ্ছে আলোক ফাঁদ

জনপ্রিয় হচ্ছে আলোক ফাঁদ

কীটনাশক ব্যবহার না করে ক্ষতিকর পোকা দমনে রোপা আমন ধানখেতে সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘আলোর ফাঁদ’ এর ব্যবহার। এই ফাঁদ খেতের পাশে পেতে রাখলে ক্ষতিকর পোকা আলোতে আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদে আটকা পড়ে মারা যায়। এতে আর আলাদা করে পোকামাকড় মারতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। কৃষকরা জানান, আলোক ফাঁদ ধানের পোকা দমনে একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। আলোক ফাঁদ তৈরিতে বৈদ্যুতিক বাল্ব ও সৌরবিদ্যুতের সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ধানখেত থেকে ১০০ মিটার দূরে বাঁশের খুঁটির সাহায্যে মাটি থেকে ২-৩ ফুট উপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে এর নিচে একটি পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রেখে ফাঁদটি তৈরিকরা হয়। সন্ধ্যার পর এই আলোক ফাঁদের আলোয় আকৃষ্ট হয়ে ধানখেতের বিভিন্ন পোকামাকড় এসে পাত্রের পানিতে পড়ে মারা যায়। অতি অল্প খরচে তৈরি এ আলোক ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতেও বেশ দৃষ্টিনন্দন লাগে। এটি ব্যবহার করে আমরা বেশ উপকৃত হচ্ছি। সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলায় ৭৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ অর্জিত হয়েছে। কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারে বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। এরইমধ্যে সদর উপজেলায় ১২ হাজার, কাজিপুরে ১১ হাজার ১০০, কামারখন্দে ৫ হাজার ৭৪৩, রায়গঞ্জে ১৯ হাজার ১৭৪, তাড়াশে ১৩ হাজার ৬৯২, উল্লাপাড়ায় ১১ হাজার ৫০৫, শাহজাদপুরে ২৬০, চৌহালীতে ১৬১, বেলকুচিতে ১ হাজার ৮১০ মিলিয়ে মোট ৭৪ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আব্দুল গুটি, কাটারি ভোগ, ব্রি-৯০, ব্রি- ৪৯, ব্রি-৫১, ব্রি-৫৮, ব্রি-৩৪ ও ব্রি-৩৬ জাতের রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছে। এ বছর রোপা আমন ধানের জমিতে তেমন কোনো রোগবালাই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদনের প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা। চলতি মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলায় ১ হাজার ৫০টি আলোর ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষতিকর পোকা চিহ্নিতকরণসহ তা দমনে কাজ চলছে। সপ্তাহের প্রতি রোববার স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে জেলার বিভিন্ন ব্লকে আলোর ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৭৫ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এসব জমিতে আলোর ফাঁদ প্রযুক্তিটি কৃষকদের জন্য খুবই উপকারী একটি পদ্ধতি। কৃষকরা আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছে। ইচ্ছা করলে এ পদ্ধতিটি যে কোনো কৃষক নিজ উদ্যোগেও ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত