ঘোড়াঘাটে নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্য

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন। বিশেষ করে বেশি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। রাত পোহালেই হুহু করে বাড়ছে পণ্যের দাম। উচ্চ মূল্যের কারণে ক্রেতা নেই কাঁচা বাজারে। এ কারণে বিক্রি কম হওয়ায় তারাও বিপাকে পড়েছেন। সরেজমিনে উপজেলার বাজার ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি আলু প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, মিষ্টি লাউ ৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪০০ টাকা, শশা ৫০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, সিম ২০০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, আদা ২৪০ টাকা, পানি কচু ৭০ টাকা। উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে বাজার করতে আসা শফিকুল ইসলাম নামে এ শিক্ষক বলেন, মাসের পর, যে বেতন পাই তা দিয়ে পুরো মাস আসে না। ২ সপ্তাহ যেতেই টান পড়ে যায়। এর উত্তরণ কবে যে হবে। পৌরশহরের বাঘেরহাটে কাঁচাবাজার করতে আসা রিকশাচালক রশিদ মিয়া জানান, তিনি বাজার করতে এসে তরকারির দাম শুনে হতবাক। সারাদিন রিকশা চালিয়ে পান মাত্র সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এ টাকা দিয়ে এত দামে সবজি কীভাবে কিনে খাব বলে চরম হতাশা ব্যক্ত করেন।

রাণীগঞ্জ, ওসমানপুর, ঘোড়াঘাট ও ডুগডুগী রাস্তায় ভাড়ায় চালিত অটোবাইক, অটোভ্যান চালকরা জানান, যাত্রী তেমন হয় না। সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকাও ভাড়া হয় না। ্অন্য কাজও নাই যে কাজ করে সংসার চালাব। তরি-তরকারির বাজারে গেলে সব শেষ হয়ে যায়। উপরন্তু সাপ্তাহিক এনজিও’র কিস্তির জন্য টাকা রাখতে হয়। দিনমজুররা বলছেন, এই সময়ে কাজ কর্ম নাই। বড় কষ্টে দিন পার করছি। এদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে সময়ে অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি সবজি চাষিদের। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। এতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। অথচ সেই পণ্যে লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। এভাবে দাম চলে যাচ্ছে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কম সরবরাহ আর পরিবহন খরচ বাড়ার অজুহাতে আকাশচুম্বী হচ্ছে সবজির দাম। অন্যদিকে আড়তদারদের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় পোটল-বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি। ফলে ফলনও কম। আগের চেয়ে সরবরাহ কমেছে। চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু সবজি নয়, স্বস্তি নেই ডিমণ্ডচাল-ডালসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যেই। খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি আর পরিবহন খরচ বৃদ্ধিতে ব্রয়লার মুরগির দামও বেশি রাখছেন ব্যবসায়ীরা। সবদিক দিয়ে দিশেহারা ক্রেতারা। বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকির দাবি জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ ও ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না। যেসব ব্যবসায়ীরা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।