সুকৃতি-নাবিনের বিয়ের দেনমোহর ৫টি গাছ

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. আব্দুর রাজ্জাক লাকি, নাটোর

বিয়েতে কনের হাতে দেনমোহর হিসেবে টাকা বা গহনা দেওয়ার প্রচলন রয়েছে আমাদের সমাজে। কিন্তু বিয়ের দেনমোহর হিসেবে কনের হাতে পরিবেশবান্ধব পাঁচটি ফলজ ও বনজ গাছ তুলে দেওয়ার ঘটনা নেই বললেই চলে। কিন্তু এমনি এক ঘটনা ঘটেছে নাটোর শহরে। বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে ৫টি গাছ নিলেন কনে সুকৃতি আদিত্য। এ ঘটনায় এলাকায় প্রতিবেশীদের মধ্য বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

গত শুক্রবার নাটোর শহরের উত্তরা গণভবন এলাকায় এমন এক বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নবদম্পতি সবার প্রসংশায় ভাসছেন। নাটোরের বাসিন্দা এম আসলাম লিটনের একমাত্র মেয়ে সুকৃতি আদিত্যের সঙ্গে কুমিল্লার বাসিন্দা নাবিন আদনানের বিয়ে সম্পন্ন হয়। কনে আদিত্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স এবং বর কুমিল্লার বাসিন্দা একই অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। বর আদনান ও কনে আদিত্য দম্পতি বিয়ের দিন দেনমোহরের পাঁচটি গাছ লাগান। এমন ব্যতিক্রম বিয়েতে প্রশংসায় ভাসছেন এই নবদম্পতি। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার নাটোর শহরের দিঘাপতিয়ায় উত্তরা গণভবন এলাকার এম আসলাম লিটনের একমাত্র মেয়ে সুকৃতি আদিত্যের সঙ্গে কুমিল্লার বাসিন্দা নাবিন আদনান বিয়ের দেনমোহর হিসেবে পাঁচটি ফলজ ও বনজ গাছ দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার পর কনে সুকৃতি আদিত্য ও বর নাবিন আদনান দেনমোহরের পাঁচটি গাছের চারা রোপণ করেন। কনে সুকৃতি আদিত্য বলেন, বর্তমানে অনেক বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে টাকা ও গহনা নিয়ে থাকেন। আমি ভেবেছি আমি দেনমোহর হিসেবে কোনো অর্থ নেব না।

এখান থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত। এ কারণে আমি বিয়েতে টাকা ও গহনার বদলে পরিবেশবান্ধব গাছ নিয়েছি। বর নাবিন আদনান বলেন, দেনমোহরের বিষয়টা নিরাপত্তা। আমার কাছে মনে হয়েছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার চাইতে পরিবেশের নিরাপত্তা বেশি জরুরি। এটা একটা প্রতীকী ব্যাপার। এর বাইরে বিশেষ কিছু নয়। প্রতীকী ব্যাপার হিসাবেই আমরা চর্চা করলাম যাতে আমরা পরিবেশ, প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারি। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। কনের বাবা এম আসলাম লিটন জানান, আমার মেয়ে সুকৃতি আদিত্য সিদ্ধান্ত নেয় সে মোহরানা নেবে না। নিলেও সে একটা টোকেন নিতে চায়। অভিভাবক হিসেবে তার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। মোহরানাটা মূল বিষয় নয়, সম্পর্কটা মূল। দুটি মানুষের হৃদয় মন এক হয় বিয়ের মধ্য দিয়ে। এই বন্ধনটাই আসল। কোনো অর্থনৈতিক বা সম্পদের জায়গায় গিয়ে চুক্তিবন্ধ হওয়ার চাইতে আত্মার চুক্তিবন্ধ হওয়া বেশি জরুরি। সেই জায়গাটা আমার মেয়ে আদিত্য অনুভব করেছে। বাবা হিসাবে তিনি গর্বিত আমার মেয়ের জন্য। তাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।