ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শরীয়তপুরে ক্রেতাশূন্য মাছবাজার

শরীয়তপুরে ক্রেতাশূন্য মাছবাজার

দেশজুড়ে ইলিশ মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। বাজারে ইলিশ না থাকায় আগের চেয়ে বেড়েছে অন্য মাছের দাম ও চাহিদা। তবে হাওর-বাঁওড় ও চাষিরা মাছ যা আনছে তারও দাম অনেক বেশি। যার কারণে বাজারে এসে উচ্চমূল্যে সাধারণ ক্রেতারা মাছ কিনতে পারছেন না। ফলে ক্রেতাশূন্য হয়ে গেছে জেলার মাছ বাজার। গতকাল শরীয়তপুরের বেশিরভাগ বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় এই চিত্র। বর্ষার পানি কমে যাওয়ার কারণে হাওর-বাঁওড়ের মাছও কমে গেছে। যাও পাওয়া যাচ্ছে, তাও উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে, যা নিম্ন আয়ের মানুষের সামর্থ্যরে বাইরে। ডোমসারের মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশের কোনো সরবরাহ নেই। ব্যবসায়ীরা সাগর ও নদীর বিভিন্ন প্রকার মাছ বিক্রি করছেন। ইলিশ না থাকায় অন্যান্য মাছের সরবরাহ বেড়েছে। অন্যদিনের তুলনায় বাজারে রুই, পাঙাশ, চিতল, কোরালসহ সাগরের বিভিন্ন মাছ বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে বাজারে ক্রেতা নেই বললেই চলে। গতকাল শরীয়তপুরের বাজারগুলোতে চিতল ৪৫০-৫০০ টাকা, সুরমা ২০০, চিংড়ি ৭০০-১০০০ টাকা, পাঙাশ ২৫০-৩০০ টাকা, কৈ ৩০০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-১৫০ টাকা, পোয়া মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৪৫০, তবে হাওর-বাঁওড়ের শিং প্রতি কেজি ৫০০-৬০০ টাকা ও পাবদা ৩০০-৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শরীয়তপুর শহরের প্রধান মাছের আড়তে গিয়ে কথা হয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বেপারীর সঙ্গে।

তিনি বলেন, অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে চাষের মাছ ও অন্যান্য মাছের চাহিদা বেড়েছে। তবে খুচরা ক্রেতারা মাছ খুব কম পরিসরে কিনছে। গত কয়েক দিন থেকে মাছের বিক্রি একেবারে কমে গেছে। ডোমসার বাজারের মাছ বিক্রেতা সুমন বেপারী বলেন, এখন আগের চেয়ে সবকিছুতেই খরচ বেড়েছে। তার ওপরে মাছের দাম ও কিছুটা বেশি। তাই বাজার ক্রেতাশূন্য বললেই হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ পরিবহন খরচ, বাজারে আড়ৎদারি। আবার গত সপ্তাহ থেকে পদ্মার মাছ আসছে না। তাই মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। আরেক মাছ বিক্রেতা মুক্তার বেপারী বলেন, আড়তে গিয়ে মাছ পাই না। মাছের দাম খুব বেশি।

তার ওপরে বেশি দাম দিয়ে যেই মাছ কিনে এনেছি, তাও মনে হয় বিক্রি করে যেতে পারব না। ক্রেতা নেই বাজারে। যারা আসে অল্প দামের মধ্যে যে মাছ পাওয়া যায়, তা কিনে নিয়ে চলে যায়। আর বড় মাছগুলো যা আমরা কিনে এনেছি, তা বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। মাছ কিনতে আসা আরিফ হোসেন বলেন, বাজারে মাছের দাম অনেক বেশি। খেতে হবে তাই কিনতে আসা।

তবে যেই পরিমাণ দাম দেখা যাচ্ছে, এখন হয়তো অন্য কিছু কিনে বাসায় চলে যেতে হবে। এর চাইতে মোরগ কিনলেও ভালো হয়। মাছ কিনতে আসা তাকবির বলেন, মাছ কেনার উদ্দেশে এসেছিলাম বাজারে। একে তো মাছ নেই, তার ওপরে দাম বাড়তি। এখন কি আর করার? মাছ কিনে নিতে বলছে বউ। শ্বশুর বাড়ির লোক এসেছে বেরাতে। তাই দাম বেশি হলেও মাছ কিনে নিতে হবে। ডোমসার মাছের আড়তের সভাপতি হানিফ বেপারী বলেন, শরীয়তপুরের মাছ হচ্ছে পদ্মা নদীকেন্দ্রিক।

তাই পদ্মা নদীতে মাছ ধরা বন্ধ হওয়ার কারণে চাষের মাছের ওপরে মানুষের চাহিদা বেড়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ আসছে না পদ্মা নদীতে মাছ ধরা বন্ধ হওয়ায়। তবে ক্রেতাশূন্য হওয়ার কারণটি বুঝতে পারলাম না।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর শরীয়তপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুজন কাজী বলেন, নদীতে জাল ফেলা নিষেধ। এইজন্য বাজারে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। তাই হয়তো মাছের দাম কিছুটা বেশি। তারপরেও বাজার মনিটরিং করা হবে। কেউ যদি ইচ্ছা করে দাম বাড়িয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত