ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কালীগঞ্জে সড়কের বেহাল দশা

ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
কালীগঞ্জে সড়কের বেহাল দশা

আলমগীর কবির পেশায় একজন কৃষক। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের আড়ুয়া শলুয়া গ্রামের মুজিদ মন্ডলের ছেলে। গ্রামের মাঠেই তাদের রয়েছে ২০ বিঘা জমি। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে সমুদয় জমি চাষাবাদ করছেন। এবার বেশ কয়েক বিঘা জমিতে তিনি আউশ ধানের আবাদ করেছেন। মাঠে তার লাগানো ধানের শীষে সোনালি বর্ণের ছোঁয়া লাগতে দেখে তার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কীভাবে পাকা ধান কেটে বাড়ি পর্যন্ত তুলবেন, এই চিন্তা যেন তার পিছু ছাড়ছে না। বছরের পর বছর ধরে মাঠে কঠোর পরিশ্রম করে সোনার ফসল ফলিয়ে সেই ফসল ঠিকমতো ঘরে তোলা নিয়ে আলমগীরকে পড়তে হয় শঙ্কায়। এই চিত্র শুধু আলমগীরের একার নয়; চাপরাইল, নগর চাপরাইল ও আড়ুয়া শলুয়া গ্রামের সব কৃষককেই মাঠের ফসল বাড়িতে উঠাতে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। কেননা, এই তিন গ্রামের মানুষের মাঠের ফসল ওঠার একমাত্র রাস্তা হলো আড়ুয়া শলুয়া গ্রামের রমজান আলীর বাড়ি থেকে মাঠ অভিমুখে খাল পর্যন্ত। আর এই রাস্তার ১ কিলোমিটার অধিক ছোটো বড় একাধিক খানা খন্দে এবং কাদায় অত্যন্ত বেহাল অবস্থা বিরাজমান থাকাই কোন ধরনের কৃষি পণ্যের গাড়ি তো দূরের কথা মানুষও পায়ে হেঁটে ঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না। বর্ষাকালের রাস্তাটি অবস্থা আরো খারাপ হয়। আড়ুয়া শলুয়া, অনুপমপুর, বলাকান্দর, চাপরাইল, নগর চাপরাইল, মল্লিকপুর, গ্রামের লোক ছাড়া ও মস্তবাপুর, বেথুলী, যাটবাড়ীয়া, মনোহরপুরের অনেকের জমি আছে এই মাঠে। ধান, গম, ভুট্টা, মশুরী, কলা, পাট, কলায়, পণ্যসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ হয় এখানে। অন্যান্য গ্রামের কৃষকদের মাঠের ফসল ঘরে তোলার ভালো রাস্তা থাকলেও নগর চাপরাইল, চাপরাইল ও আড়ুয়া শলুয়া গ্রামের কৃষকদের একমাত্র মেঠোপথটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় পড়ে থাকলোও এদিকে কারর নজর নেই। আড়ুয়া শলুয়া গ্রামের কৃষক ও কৃষানি রমজান আলী ও আলেয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঠের ফসল ঘরে তোলার জন্য এই রাস্তাটির গুরুত্ব অনেক। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে রাস্তাটির এতটাই বেহাল দশা যে ফসল ঘরে তুলতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একাধিকবার রাস্তাটি ব্যবহার উপযোগী করে দেবেন বলে কথা দিলেও তিনি তা করেননি। কৃষকদের কথা চিন্তা করে রাস্তাটি অন্তত দ্রুত ব্যবহার উপযোগী করে দেওয়া উচিত বলে তারা মনে করেন। নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য বাবলুর রহমান বলেন, এই রাস্তায় এত বেশি কাদা যে এবার কৃষকদের পাট উঠাতে ট্রাকটার ব্যবহার করতে হয়েছে। আমার মনে হয় কালীগঞ্জে এমন বেহাল রাস্তা আর একটিও নেই। রাস্তাটি নিয়ে কৃষকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমি রাস্তাটি করে দেওয়ার ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে বারবার অবগত করেছি। উনি আশ্বস্ত করেছেন করে দেবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত