দুই বছরের কাজ শেষ হয়নি পাঁচ বছরেও

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

কার্যাদেশ পাওয়ার দুই বছরের মধ্যে সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করার শর্ত পাঁচ বছরেও তা শেষ হয়নি। এখন বন্ধ রয়েছে কাজ। এ অবস্থা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আমিরাবাদ থেকে চন্দ্রপাড়া হয়ে মধ্য মদনপুরা পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কের। সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আশপাশের ১০ গ্রামের বাসিন্দাদের।

পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ‘পটুয়াখালী-বরগুনা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’র আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আমিরাবাদ বাজার থেকে চন্দ্রপাড়া চৌরাস্তা হয়ে মধ্য মদনপুরা বাজার পর্যন্ত ৪ দশমিক ২৯০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৬ টাকা।

প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে মেসার্স পল্লী স্টোর নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। শর্তানুযায়ী ২০২০ সালের ২৮ জুলাই কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে একাধিকবার মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তিন বছরেরও অধিক সময় কাজ বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটি দিয়ে মদনপুরা ও কনকদিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ উপজেলা সদর, সূর্যমণি ও নাজিরপুর ইউনিয়নে যাতায়াত করে। এছাড়া মদনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চন্দ্রপাড়া মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনামুদ্দিন মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, দ্বিপাশা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাউফল সরকারি কলেজ ও ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীদের এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দীর্ঘদিন সড়কটি নির্মাণাধীন থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। দ্বিপাশা এলাকার খালেক হাওলাদার নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘মধ্য মদনপুরা, চন্দ্রপাড়া, আমিরাবাদ, দ্বিপাশা, রামলক্ষণ, সোনামুদ্দিনসহ প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ এই সড়ক দিয়ে সহজে উপজেলা শহর, কনকদিয়া ইউনিয়ন, নাজিরপুর ইউনিয়ন, সূর্যমণি ইউনিয়নে যাতায়াত করতে পারে।

সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করে মদনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা এবং ব্যবসায়ী সবুর খানের কাছে বিক্রি করে দেয়। তারা সড়কের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ করে। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে সড়কের একাধিক স্থানে পাইলিং, একাধিক বাড়ির সংযোগ সড়ক ও কার্পেটিং বাকি রেখে কাজ বন্ধ করে দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা জানান, তিনি ও সবুর খান নির্মাণকাজ শুরু করেন। বরাদ্দের দুই কোটি টাকা বিলও উত্তোলন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাদের সঙ্গে জটিলতা দেখা দিলে কাজ বন্ধ করে দেয়। জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. বাদল বলেন, ‘কোনো জটিলতা নেই। বর্ষার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।’ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সুলতান হোসেন বলেন, ‘কাজ বন্ধের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নেবে।’ পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ লতিফ হোসেন বলেন, ‘পটুয়াখালী-বরগুনা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কাজটি হচ্ছে, যা দেখাশোনা করছেন প্রকল্প পরিচালক। এ বিষয়ে তিনিই (প্রকল্প পরিচালক) ব্যবস্থা নেবেন।’ বিষয়টি প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ইসমত কিবরিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ব্যবস্থা নেবেন। তিনিই সব।’