আত্রাইয়ে ব্রিজের অভাবে ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আত্রাই নদীর সমসপাড়া ফেরিঘাট ও ছোট যমুনা নদীর আটগ্রাম ভুপনার ঘাটে দুটি ব্রিজের অভাবে দিনের পর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দাদের। ব্রিজের অভাবে হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও উপজেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র ভরসা নৌকা। এতে করে যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহণে ক্ষেত্রে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে উপজেলার অন্তত প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে তাদের দীর্ঘদিনের দাবি এই দুটি ব্রিজ নির্মাণের। তবে বারবার ব্রিজের জন্য আবেদন করেও সাড়া মিলছে না। সরেজিমন গিয়ে দেখা যায়, আত্রাই নদীর সমসপাড়া ও আটগ্রামে দুটি খেয়াঘাট রয়েছে। নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকা দিয়েই নদী পারাপার হচ্ছেন ভাঙ্গাজাঙ্গাল, সমসপাড়া, বিশা, আটগ্রাম, ত্রিমোহনীসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। ভাঙ্গাজাঙ্গাল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, ‘পারাপারের জন্য ফেরিঘাটে এসে প্রতিদিন নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তখন নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়। এত কিছুর উন্নয়ন হলেও আমাদের কপালে একটি সেতু জোটেনি।’ সমসপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নদীর দক্ষিণ পাশের কয়েকটি গ্রামে থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন খেয়াঘাটের নৌকা পাড়ি দিয়ে সমসপাড়া স্কুলে আসে। বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বাড়ে দ্বিগুন।’ আটগ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান বলেন, ‘আটগ্রাম ভুপনার ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের আত্রাই সদর, রাণীনগর ও নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে নৌকায় পার হতে হয়। এই ঘাটে অনেক সময় নৌকার যাত্রী পর্যাপ্ত না হলে নৌকা চলে না। অনেক সময় দঁড়ি টেনে নিজেকেই নৌকা নিয়ে পার হতে হয়।’ রাণীনগরের ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে এভাবেই চলছে এখানকার মানুষ। সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলালেও স্থানীয়দের ভাগ্য বদলায়নি। একটি সেতুর অভাবে সবক্ষেত্রেই বিপত্তি বাড়ছে। সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’ এ বিষয়ে বিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘সেতু না থাকায় আশপাশের ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষ কষ্টে আছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা, ব্যবসায়ী ও কৃষকদের পণ্য পরিবহণ থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমস্যা চরমে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নজরেও আছে।’ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্ততর (এলজিইডি) নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এই দুইটি ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু সেটি বাতিল হয়েছে। আবার নতুন করে প্রস্তাব পাঠাব হবে। সেই প্রস্তাব অনুমোদন পেলে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।’