ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চোরে নিল ভ্যানের ব্যাটারি

উজ্জ্বল দাসের পরিবারের দিন কাটছে অনাহারে

উজ্জ্বল দাসের পরিবারের দিন কাটছে অনাহারে

পঞ্চাশোর্ধ উজ্জ্বল দাস ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৩নং কোলা ইউনিয়নের কামালহাট গ্রামের মৃত রনজিত কুমার দাস ও কমেলা রানী দাসের ছেলে। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তার অভাবের সংসার। মাত্র ২ শতাংশ জমির ওপর টিনের ছাপড়ার দুটি ঘর তার মাথাগোঁজার একমাত্র ঠাঁই।

উজ্জ্বল দাস পাঁচজনের সংসার চালাতে প্রথম দিকে অন্যের জমিতে কামলা হিসেবে কাজ করতেন। এরপর তিনি শুরু করেন পায়ে চালিত ভ্যান চালানো।

দিন দিন শরীরে শক্তি সামর্থ্য কমতে থাকায় পায়ে চালিত ভ্যান গাড়ির পরিবর্তে অনেক কষ্টে ধারদেনা করে তিনি পুরোনো বডির একটি ভ্যান গাড়িতে চারটি ব্যাটারি সংযোজন করে ওই ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালিয়ে কোনো মতে দুই বেলা দুমুঠো খেয়েপরে দিন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু বিধিবাম! চোরের কুদৃষ্টি পড়ল অসহায় নিঃস্ব উজ্জ্বল দাসের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ব্যাটারিচালিত সেই ভ্যান গাড়িটির দিকে। সপ্তাহ তিনেক আগে গভীর রাতে চোরচক্রের সদস্যরা উজ্জ্বল দাসের বাড়ির উঠান থেকে ভ্যান গাড়িটি চুরি করে মাঠের মধ্যে নিয়ে তা থেকে ব্যাটারিগুলো খুলে নিয়ে যায়। আর ফেলে রেখে যায় পুরোনো বডির ভ্যান গাড়িটি। পরের দিন সকালে ভ্যান গাড়িটি বাড়িতে না দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মাঠের মধ্যে ব্যাটারিহীন ভ্যানটি তিনি খুঁজে পান। ব্যাটারি না থাকায় ভ্যানটি এখন অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে তার বাড়িতে। যে কারণে ওই ভ্যান দিয়ে তিনি আর উপার্জন করতে পারছেন না। আগে ভ্যান চালিয়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হলেও এখন উজ্জ্বল দাসের আয়ের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ। এতটাই অভাবী উজ্জ্বল দাস যে, তার গায়ে দেওয়ার মতো একটি ভালো জামাও নেই। এমনকি পায়ে দেয়ার মতো নেই এক জোড়া জুতা। ব্যাটারি চুরি হওয়ার পর কেমন যেনো হয়ে গেছেন উজ্জ্বল দাস। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন, সংসার চালানোর চিন্তা তার চোখেমুখে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। ১০ টাকা কেজি চাউলের একটি কার্ড ছাড়া আর কোনো সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা তিনি পান না। অবশ্য উজ্জ্বল দাস অন্যের সহযোগিতায় জীবন চালাতে চান না। নিজের পরিশ্রমের টাকায় সংসার চালাতেই তিনি পছন্দ করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত