ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পঞ্চগড়ে উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা!

পঞ্চগড়ে উঁকি দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা!

কাঞ্চনজঙ্ঘা বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। ভারতের সিকিম ও নেপাল সীমান্তে এর অবস্থান। এই রাজকীয় চূড়ার দেখা মিলছে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরের বাংলাদেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে। শীতের শুরুর দিকে যখন আকাশ মেঘ এবং কুয়াশামুক্ত থাকে, তখন পঞ্চগড়ের বিভিন্ন স্থান থেকে খালি চোখেই এই পর্বতশৃঙ্গের অপরূপ রূপ দেখা যায়। গত কয়েক দিন ধরে ভোর থেকে সন্ধ্যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার অবলোকন করেছে পঞ্চগড়ের মানুষ। কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় মনোমুগ্ধকর শোভা উপভোগ করতে হাজারো ভ্রমণপিপাসু প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটক আসছেন পঞ্চগড়ে। পর্যটকদের নির্বিঘ্ন ভ্রমণে নিরাপত্তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। ভোর বেলা হতে না হতেই সফেদ সাদায় রূপ নেয়। পরে সূর্যদয়ের আলোর রশ্মি যখন সাদা বরফের একদিকে চূড়ায় পড়ে, তখন দেখতে লালচে রূপ নেয়। দুপুরের পর কোনো কোনো সময় দেখতে পাওয়া যায় না। আবার সাদার মতো থাকে। তবে শেষ বিকালে গোধূলির আলোয় লালচে রূপ ধারণ করে কাঞ্চনজঙ্ঘা, যা সন্ধ্যাঅবধি দেখা যায়। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ার সময়গুলোতে তেঁতুলিয়ায় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলনমেলা বসে। শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধদের পাদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। মহানন্দা নদীর পাড়ে বসে থাকা, কারো সেলফি তোলা, ভিডিও করা, পর্যটকদের যত্রতত্র হাঁটাচলা, মহানন্দা নদী থেকে শত শত মানুষের পাথর উত্তোলনের দৃশ্য দেখে মনে হয় যেন উৎসব চলছে। উত্তরের এ জেলাজুড়ে আছে পর্যটনের আরো নিদর্শন। প্রাচীন স্থাপনা, প্রত্ন পর্যটন, ইতিহাস-ঐতিহ্য, গুপ্ত, পাল, সেন ও মুসলিম শাসনামলের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এ জেলা। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। দেশের একমাত্র চার দেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এ জেলায়। আরো রয়েছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন ও জিরো পয়েন্ট, বিজিবি-বিএসফের জয়েন্ট রিট্রিট সেরিমনি, ইংরেজ আমলে জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, সমতল ভূমির চা-বাগান, টিউলিপ গার্ডেন, আনন্দধারা পার্ক, ভিতরগড় দুর্গনগরী, মহারাজা দিঘি, পাথরের জাদুঘর, মোগল স্থাপনা মির্জাপুর শাহী মসজিদ, বোদেশ্বরী পীঠ। জেলার পর্যটনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল। সরকারিভাবে রয়েছে আবাসন ব্যবস্থা। পঞ্চগড় জেলা শহরে রয়েছে সার্কিট হাউজসহ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের গেস্টহাউস। বেসরকারিভাবে সেন্ট্রাল গেস্টহাউজ, হোটেল মৌচাক, হোটেল প্রিতম, অগ্রদূত প্যালেস, এইচকে প্যালেস, ধানসিঁড়িসহ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল রয়েছে পঞ্চগড়ে। পর্যটনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় অর্থনীতি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটকের সমাগম ঘটে এ জেলায়। বিশেষ করে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসজুড়ে পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত থাকে তেঁতুলিয়া। এতে ব্যস্ততা বেড়ে যায় হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে। গতি পায় তিন চাকার ভ্যান আর অটোরিকশার মতো যানগুলোও। আরেফিন আকতার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, দিনের বেলায় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা শেষে সন্ধ্যার পর মহানন্দার পাড়ে বসে সীমান্ত লাইট ও শৈল শহর দার্জিলিংয়ের পাহাড়ের ওপরের নিয়ন বাতি জ্বলতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত