ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কাছ থেকে দেখার অদম্য বাসনা পূরণ

আসছে শীত ডাকছে সুন্দরবন!

আসছে শীত ডাকছে সুন্দরবন!

সুন্দরবন একটি প্রাকৃতিক বিস্ময়ের নাম। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল। সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার, যা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্যে রয়েছে। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াাখালি ও বরগুনা জেলার অংশ নিয়েই বাংলাদেশের সুন্দরবন। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সুন্দরবনকে জীব ও উদ্ভিদ জাদুঘর বললেও কম বলা হবে। সুন্দরবনের ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটারজুড়ে রয়েছে নদীনালা ও বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ বিচিত্র নানান ধরসের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে সুন্দরবন পরিচিত। এখানে রয়েছে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রাজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ সরীসৃপ এবং ৮টি উভচর প্রাণী। সুন্দরী বৃক্ষের নামানুসারে এই বনের নাম সুন্দরবন রাখা হয়। সুন্দরবন বেড়ানোর উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। এই সময় নদী ও সমুদ্র শান্ত থাকে, তাই সুন্দরবনের সব দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা যায়। শ্যামনগর থেকে অতি কাছে রয়েছে কলাকাছিয়া, দোবেকী ইকোট্যুরিজম। সেখান থেকে হারবাড়িয়া, করমজল, মান্দারবাড়িয়ার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তবে মূল সুন্দরবনের স্বাদ পেতে হলে গহিনের স্থানগুলোতেই যেতে হবে। বন বিভাগ থেকে সুন্দরবনের নির্দিষ্ট কয়টি জায়গা ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়। সুন্দরবন ঘুরে দেখা যায় খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও বরগুনা দিয়ে। তবে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভ্রমণ করে থাকে শ্যামনগর দিয়ে। খুলনা ও মোংলা থেকে ভ্রমণের জন্য উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে করমজল, হারবাড়িয়া কছিখালি, কটকা, জামতলা, হিরন পয়েন্ট ও দুবলারচর, মান্দারবাড়িয়া। শ্যামনগর থেকে থেকে সবচেয়ে কাছে করমজল। এটি মূলত বন বিভাগের হরিণ ও কুমির প্রজনন কেন্দ্র। এখানে আছে বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া কাঠের পুলের ট্রেইল, হরিণ, কুমির, বানর সহ নানা প্রজাতির গাছ গাছালি। সুন্দরবনের গহীনে যদি পশু–পাখি দেখার সুযোগ না হয়ে থাকে, তবে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটবে করমজলে। হারবাড়িয়া সুন্দরবনের অন্যতম একটি পর্যটন স্থান। শ্যোমনগর থেকে দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। এখানের মূল আকর্ষণ বনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার কাঠের ট্রেইল। পুরো ট্রেইলটা ঘুরে আসতে ৩০ মিনিটের মত সময় লাগে। সুন্দরবন এলাকার মধ্যে ছোট্ট একটি চর হচ্ছে দুবলার চর। দুবলার চরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী গিয়ে মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। হিন্দুধর্মের পূণ্যস্নান, রাসমেলা এবং শুঁটকির জন্য বিখ্যাত। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি- এই ৫ মাস প্রায় ১০ হাজারের মতো জেলে সাময়িক বসতি গড়ে সেখানে। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শুকানোর কাজ। এসব দর্শনীয় স্থান যাওয়ার সময় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, লঞ্চ একমাত্র বাহন। যা চলার পথে দেখা মিলতে পারে নদীর চরে দাড়ানো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। যা দেখে শিউরে উঠবে আপনার চঞ্চলা মন। তাই এবারের শীত মৌসুমটা কাটুক সুন্দরবনের মনরম সৌন্দর্যে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত