ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

নওগাঁয় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

এ বছর আগেভাগেই শীতের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয়। আকস্মিক আবহাওয়া পরিবর্তনে শীতের আগেই ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করেছে সব বয়সি মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। হঠাৎ করেই শিশু রোগীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে। প্রয়োজনীয় জনবল, শয্যা ও ওষুধ সংকটে বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তথ্য মতে, ১০০ শয্যা সদর হাসপাতাল হিসেবে সেবা প্রদানের দীর্ঘ ২২ বছর পর ২০১৯ সালে নতুন ১৫০ শয্যার ৮ তলা বহুতল ভবন পেয়ে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এই হাসপাতালটির ২৫০ শয্যায় সেবা কার্যক্রম চালুর প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে নতুন ভবনটি রোগীদের সেবায় পুরোপুরি ব্যবহার শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে নতুন ভবন চালুর পরই পুরাতন ভবনটির ১০০ শয্যার কক্ষগুলো মেডিকেল কলেজের প্রয়োজন হওয়ায় সেটি তাদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। বর্তমানে নতুন ভবনের ১৫০ শয্যায় দৈনিক গড়ে ২৩০ জন রোগী ভর্তি থাকে এবং ১৫০ জন নতুন রোগী দৈনিক ভর্তি হচ্ছেন। তবে ২৫০ শয্যার অনুমোদনের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় জনবল, ওষুধ ও খাবারের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। ২৫০ শয্যা হিসেবে এই হাসপাতালে ৬৭ জন চিকিৎসক ও ২ শতাধিক নার্স থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র ৩০ জন চিকিৎসক ও ৮২ জন নার্স। এতে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা। হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার সুফিয়া খাতুন বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৩৪৬ জন রোগী শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। পরের মাস অক্টোবরে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৯১৩ জন। হঠাৎ করেই শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১ মাসের ব্যবধানে ওই ওয়ার্ডে শিশু ভর্তির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ফরিদ হোসেন বলেন, শৈত্য প্রবাহের আগে দৈনিক ৬০-৬৫ জন রোগী ভর্তি থাকতো। এখন তা প্রায় ৮০ জন ছাড়িয়েছে। ধুলাবালিতে ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাচ্চাদের খেলাধুলা এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই এখনকার শিশুরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শীতজনিত রোগ থেকে নিরাপদে রাখতে শিশুদের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত নিয়মিত মায়ের বুকের দুধ পান করানোসহ পিপিআই টিকা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আবু আনছার আলী বলেন, এ বছর শীত শুরুর অনেক আগেই ঠান্ডাজনিত রোগে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। ওইসব রোগীদের ভর্তির চাপই এখন বেশি। রোগীদের চাপ সামাল দিতে এখানকার চিকিৎসক ও নার্সদের বরাবরই কিছুটা বেগ পেতে হয়। কারণ এই হাসপাতাল শুধুমাত্র নামেই ২৫০ শয্যা। ১০০ শয্যার পরিপূর্ণ লোকবলও নেই। বাস্তবতায় ২৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল, ওষুধ ও খাবারের প্রশাসনিক অনুমোদন না থাকায় প্রতিনিয়তই রোগীদের পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। দ্রুত প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি মেডিকেল কলেজটি স্থানান্তর হলে হাসপাতালের সেবার মান বাড়বে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত