নওগাঁয় বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে আলুর বীজ

উৎপাদন খরচ বাড়ার শঙ্কা

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

উত্তরের কৃষিপ্রধান জেলা নওগাঁয় আলু চাষে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। বাজারে এবার বেশি দাম পাওয়ায় বীজ আলু সংরক্ষণ না করে বিক্রি করে দিয়েছেন অনেক কৃষকরা। ভালো দাম পাওয়ায় আবাদেও আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। বর্তমানে বীজ আলুর দাম বেড়েছে অনেক। কিন্তু এবার আলু চাষে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আলু বীজের দাম। গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন দামে আলু বীজ কিনে চাষাবাদ করতে হচ্ছে কৃষকদের। এতে করে বিঘাপ্রতি চাষের শুরুতেই বীজ বাবদ বাড়তি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। অনেকেই আলু বীজ হিমাগার থেকে বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে বীজেরও সংকট দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর আলুর বীজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে চার হাজার টাকা মণ। গত বছর বিভিন্ন জাতের আলুর বীজের দাম ছিল ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা মণ। এক বিঘা জমিতে আড়াই থেকে তিন মণ বীজ আলু লাগে। এতে করে আলু চাষের শুরুতেই বীজ বাবদ বাড়তি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকসহ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাগছে। হালচাষ, সার, শ্রমিকের মজুরি বাবদ লাগছে আরও প্রায় ৫ হাজার টাকা। এতে করে এক বিঘা জমিতে আলু লাগাতেই শুরুতেই খরচ পড়ছে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। এছাড়াও আলুর গাছ উঠার পর সেচ, নিড়ানি ও কিটনাশক বাবদ আরো ৫ থেকে ৬ হাজার খরচ হবে। এতে করে এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ পড়বে ২১ থেকে ২৩ হাজার টাকা। পুরোদমে আলু চাষ শুরু হলে বীজ সংকট ও দাম বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা চাষিদের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষসহ জেলায় প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে এবছর বাজারে আলুর দাম বেশি হওযায় কৃষকরা আলু চাষে আরো বেশি ঝুঁকবেন এবং আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ। নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল গ্রামের কৃষক আতোয়ার রহমান বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে পাঁপড়ি জাতের আলুর আবাদ করেছি। তবে এবছর খাওয়ার আলুর দাম বেশি হওযায় গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন দামে আলুর বীজ কিনতে হয়েছে। আলু লাগানোর সময় গত বছরের চেয়ে বীজ বাবদ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা বেশি লেগেছে। এছাড়াও সার, কীটনাশকের দাম বেশি। জমি চাষ ও শ্রমিকের মজুরিও বেশি হওয়ায় আলু চাষে বিঘাতে না হলেও ২১ হাজার ২৩ হাজার টাকা খরচ হবে। নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলায় এরই মধ্যে উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত আলু লাগানো যাবে। যেহেতু এবার বাজারের আলুর দাম বেশি তাই তুলনামূলকভাবে আলু বীজের দাম বেশি। এছাড়াও বাজারের আলুর দাম বেশি হওযায় কৃষকরা আরো বেশি আলু চাষে ঝুঁকবেন এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।