শ্যামনগরে যত্রতত্রভাবে হাট-বাজারে ভেজাল সার ও বালাইনাশক কেনাবেচা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের নজদারির অভাবে এবং বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করার জন্য ভেজাল সার, বালাইনাশক উৎপাদন ও বিক্রি করার সাহস পাচ্ছেন একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। উপজেলা কৃষি অফিসের তালিকাভুক্ত খুচরা এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে সার বালাইনাশক কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। অপরদিকে জমিতে ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে জমির উবর্রতা শক্তি হারাচ্ছে। আবার অর্থনৈতিকভাবে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২ ইউনিয়নে বিসিআইসি সার ডিলার রয়েছে ১২টি। ১২ ইউপির প্রতিটি ওয়ার্ডে সাব ডিলার খুচরা বিক্রেতা রয়েছে ১০৮ জন। এ ছাড়া বালাইনাশক ডিলার আছে প্রায় তিন শতাধিক।
দেখা গেছে, উপজেলার ইউনিয়নে কৃষি অফিসের যোগসাজসে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাজারে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সার কেনাবেচার দোকান। ভুরুলিয়া এলাকার এক সাব-সার ডিলার অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় ভরে গেছে সারের দোকান। কিন্তু রাজনৈতিক দলের প্রভাব দেখিয়ে প্রতিনিয়ত এই এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ সার কেনাবেচার দোকান। এ বিষয়ে বার বার কৃষি কর্মকর্তাকে অভিযোগ দেওয়া পরও তিনি কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিআইসির এক সার ডিলার বলেন, কৃষি অফিসের তদারকির অভাবে এবং বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করার জন্য। অজ্ঞাত স্থান থেকে সার কিনে বাজার জাত করার ফলে সার ও বালাইনাশক ভেজালের জটিলতা বেশি দেখা দিয়েছে। অনেকে ঘরে বসে বিভিন্ন প্রকার সার বালাইনাশক তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে। খানপুর গ্রামের কৃষক ইসকেনদার বলেন, ডিলারদের কথা শুনে ওষুধ দিয়ে জমির রোগ-বালাই যাচ্ছে না। অন্যদিকে ফসল ও জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মালটিন্যাসনাল কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ বালাইনাশক আমরা কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে থাকি। আমাদের কোম্পানি সরকারকে কর দিয়ে থাকেন। যে কোম্পানির মালিকরা সরকারকে কর দেয় না, ভূইফোর তাদের কথা কৃষি কর্মকর্তা শুনে। কারণ কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের উপঢোকন দেওয়া হয়। এজন্য উপজেলায় ভেজাল অবৈধ বালাইনাশকে ছয়লাভ হয়ে গেছে।