জুড়ীতে কমলায় পোকার আক্রমণ

কমছে উৎপাদন

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার উঁচু-নিচু পাহাড় ও সমতল ভূমিতে রয়েছে বেশ কমলার বাগান। বাগানের ছোটবড় গাছে গাছে দোল খাচ্ছে পাঁকা ও আধাপাঁকা কমলা লেবু। এবারে সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ও সেঁচের অভাবে খরায় ঝরছে ফুল ও ফল, এতে উৎপাদন কমেছে। এছাড়াও পাহাড়ি অঞ্চলের বাগানগুলোতে গান্ধী পোকার আক্রমণে ভালো ফলন হয়নি। তবে কিছু কিছু কৃষক পোকামাকড় নিধনে ‘সেক্সফরমুনফাঁক ও আলোক ফাঁদ’ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে অন্যান্য পোকাণ্ডমাকড় দমন করা গেলেও গান্ধী পোকা দমন করা যায়নি।

ফলে এবারে আশানুরূপ ফলন পাওয়া সম্ভব হবে না। উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়েনের লালছড়া, শুকনাছড়া, ডোমাবাড়ি, লাঠিটিলা, লাঠিছড়া, হায়াছড়া, কচুরগুল, সাগরনাল ইউনিয়নের পুঁটিছড়া ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের বিনোদপুর, দুর্গাপুর, জামকান্দি, ছোটধামাই গ্রামে এবং জায়ফরনগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুরসহ অন্যান্য গ্রামের টিলা বাড়িগুলোতে রয়েছে কমলা বাগান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও সঠিকভাবে পরিচর্যায় এক একটি বাগান থেকে প্রতি বছর ৫ থেকে ৮ লাখ টাকার ফলন বাজারজাত করা সম্ভব। দেশে লেবুজাতীয় ফসলের সংকট ও ভিটামিন (সি) মোকাবিলা করতে ও বিদেশ থেকে কমলা আমদানি রোধ করতে অর্থাৎ, কমলা উৎপাদনে দেশে স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে সঠিক নিয়ম পর্যাবেক্ষণ করে উৎপাদনে বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৬.৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৫টি কমলা বাগান রয়েছে। তন্মধ্যে গোয়ালবাড়ি ইউপিতে ৬২ হেক্টর। অত্রাঞ্চলের অধিকাংশ কমলা খাঁসি ও নাগপুরি জাতের আবাদ হচ্ছে। সম্প্রতি জুড়ীতে নতুন দুই জাত কমলা উদ্ভাবন করা হয়েছে বারি-১ ও বারি-৩ জাতের। গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রনি সিংহ ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুরঞ্জিত ধর রনি বলেন, তুলনামূলক এ বছর কমলার ফলন কম হয়েছে। তবে এবারে কমলায় কিছুটা মাছি ও গান্ধিপোকার আক্রমণ রয়েছে। আমরা সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

কিন্তু চাষিরা যেভাবে কাজ করার কথা। সেভাবে কাজ করেনি। প্রতিবছর কমলার উৎপাদন ভালো হলেও শেষ পর্যন্ত কমলার মান খুব একটা ভালো হয় না। সেক্ষেত্রে কমলা গাছে জাল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে কৃষকরা লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প নামক একটি প্রকল্প আসার পর থেকে কিছু সহযোগিতা করা হচ্ছে। গোয়ালবাড়ি ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নে তা সঠিক পরিচর্যা এবং কৃষকদের কার্যকরি প্রদক্ষেপ থাকলে আগের স্থানে ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম খান বলেন, কমলার ফুল আসার সময়ে খরা ছিল। টিলা বাগানে সেঁচের ব্যবস্থা না থাকায় আমরা বোতলে ছিদ্র করে গাছের গোড়ায় রাখার পরামর্শ দিয়েছি। গোয়ালবাড়ী ও পূর্বজুড়ী ইউপির পাহাড়ি অঞ্চলে কমলার বাগানগুলোতে গান্ধী পোকার আক্রমণ রয়েছে। গান্ধী পোকা কন্ট্রোল করা কঠিন। চাষিরা যদি সঠিক সময়ে সঠিক মেডিসিন ব্যবহার করতেন, তাহলে এবারে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেত।