শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হেমন্ত

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

হেমন্তের সকালে হালকা কুয়াশার আচ্ছাদন। নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। হেমন্ত মানেই প্রভাতের শিশিরভেজা শিউলি। নদীর কূলে সুশোভিত সাদা কাঁশবনের দোল খাওয়া। হেমন্তের শিশিরস্নাত ভোর দেখে মনে হবে শীতকাল। বাতাসে শীতের আনাগোনা নেই, তীব্রতা নেই রোদের। দুপুরে রোদের সামান্য তীব্রতা থাকলেও সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়লেই তা কমে যায়। বাংলার এমন প্রকৃতি দেখে সবাই বোঝে এটি হেমন্তের কার্তিক। এ সময় গ্রামের দিকে বিকালে আর শেষ রাতে অনুভূত হয় শীতের আমেজ। নীল আকাশ, শুভ্র কাঁশবন আর কাঁচা পাকা ধানের শীষে শিশির বিন্দু; হেমন্তে বাংলার গ্রামীণ দৃশ্যপট ছবির মতোই সুন্দর লাগে। বাংলার অপরূপ প্রকৃতিতে মুগ্ধ হয়ে কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে-এই বাংলায়/হয়তো মানুষ নয়-হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে/হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে/কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়। গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শরৎ তার আলোর পাখনা গুটাতে না গুটাতে চলে আসে হেমন্ত। জমিতে তখন ধান সবুজ বর্ণ ধারণ করে। হেমন্তের শেষ দিকে ধান গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করতে শুরু করলেই কৃষক ধান কাটা শুরু করবে। এ সময় না শীত, না গরম অ™ূ¢ত এক আবেশে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। ধান কাটা শেষ হলে গ্রামাঞ্চলে শুরু হবে উৎসবের আয়োজন। নতুন শস্যে ঘর পূর্ণ করার উৎসব, এই উৎসবের নাম নবান্ন উৎসব। নতুন ধান তোলার আনন্দে কৃষকদের মনে জেগে ওঠে অ™ূ¢ত এক শিহরণ। কঠিন পরিশ্রমের ফল পায় তারা এই সময়। গোলায় নতুন ধান তোলে কৃষকরা উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে। ঢেঁকিতে ভেঙে চালের গুঁড়ি তৈরি হয় পুলি পিঠা, পাটিসাপ্টা পিঠা, চিতই পিঠা। খেঁজুরের গুড় দিয়ে এসব পিঠা খেতে অনেক ভালো লাগে। সনাতনী ধর্মাবলম্বিরা এ সময় উঠানের মাঝখানে আলপনা এঁকে লক্ষ্মী পূজা করেন। প্রকৃতিতে মৌ মৌ গন্ধ শীতের আগাম বার্তার আওয়াজ দিচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে সন্ধ্যা নামলেই কুয়াশায় ভরে যাচ্ছে পুরো এলাকা।