খুরা রোগের প্রকোপ বেড়েছে কেশবপুরে

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরে গরুর খুরা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। দুই মাসে অন্তত ২০টি গরু মারা গেছে। সাধারণত টিকা দিয়ে খুরা রোগের চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু কেশবপুর উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী টিকার সরবরাহ অনেক কম হওয়ায় গরুর খুরারোগের চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে। এতে গরুর মালিক ও কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৬০টি গরু খুরারোগে আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে ২০টি গরু মারা গেছে। সরকারের তথ্যের বাইরেও অনেক গরু খুরারোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে বলেও গরুর মালিকরা জানিয়েছেন। গত দুই মাসে বাগদা, দেউলি, বায়সা, বেতিখোলা ও মূলগ্রাম গ্রামে এই রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গরুর মালিকরা জানান, গরুর খুরারোগের টিকা সরকারিভাবে সহজলব্য নয়। যে কারণে গরু বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত হলেই মারা যাচ্ছে। খুরারোগ থেকে গরুকে রক্ষা করতে টিকা দিতে হয়। কিন্তু উপজেলায় টিকার ব্যাপক সংকট রয়েছে। তারা সরকারিভাবে টিকার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ সূত্র জানায়, কেশবপুরে ৯৩ হাজার গরু রয়েছে। এর মধ্যে চার মাস বয়সি গরুর সংখ্যা ৬০ হাজার। এ বয়সের গরু টিকার আওতায় আনতে হয়। বাৎসরিক ১ লাখ ২০ হাজার টিকার প্রয়োজন। সেখানে সরকারিভাবে গত দুই মাসে মাত্র ৬০টি ভায়াল টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। এক ভয়ালে ১৬টি গরুকে টিকা দেওয়া যায়। সে হিসেবে ৬০টি ভায়াল দিয়ে মাত্র ৯৬০টি গরুকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার বাগদা গ্রামের আবদুল জলিল মোড়লের দুইটি গরু খুরারোগে মারা গেছে। আবদুল জলিলের দুইটি গরুর মূল্য দেড় লাখ টাকা হবে। একই দিনে দেউলী গ্রামের ইসমাইল হোসেনের একটি গরু খুরারোগে মারা যায়। এর আগে মূল গ্রামের ইকবাল হোসেন এবং আবদুল খালেকের দুইটি গরু মারা গেছে। ইকবাল হোসেনের গরুটির মূল্য ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা হবে। উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অলোকেশ কুমার সরকার বলেন, এই রোগ থেকে গরুকে রক্ষার একমাত্র উপায় হচ্ছে গরুকে তিন-চার মাস পরপর টিকা দেওয়া। তাহলেই গরু খুরারোগ থেকে রক্ষা পাবে। তিনি আরো বলেন, এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে তারা গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে টিকা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। কিন্তু অনেকেই টিকা দেননি। তবে তিনি স্বীকার করেন, সরকারিভাবে টিকার সরবরাহ অনেক কম।