ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হারিয়ে যাচ্ছে অপরূপ সুন্দরের প্রতীক বক

হারিয়ে যাচ্ছে অপরূপ সুন্দরের প্রতীক বক

পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের ‘বৃষ্টির ছড়া’ কবিতার পঙ্ক্তি ‘বকের সারি কোথায় রে’ লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় নদীনালা-খাল-বিল ও অনেক বড় বড় দিঘি রয়েছে। এসব থাকা সত্ত্বেও আগের মতো বক ও বকের সারি আর চোখে পড়ে না। এক যুগ পূর্বেও বকের বিচরণ ছিল ব্যাপক হারে। শিকারিরা বিভিন্ন পন্থায় বক শিকার করে আজ তা বিলুপ্তির পথে। বক শিকারিরা বাঁশের চিপ দিয়ে গোলাকৃতির খাঁচা বানায়। তা আড়াই ফুট প্রস্থ ও সাড়ে ৩ ফুট উচ্চতায়। ওই খাঁচার বাহিরের দিকে বেতের পাতা স্তরে স্তরে সাজিয়ে দেওয়া হয়। উপরের দিক দিয়ে বেত পাতা খাড়াভাবে লাগিয়ে শিকারি এ ফাঁদের ভেতরে ঢুকে পালিত বকের সাহায্যে কৌশলে বক শিকার করে। আবার অনেকে নাইলন সুতায় গিট দিয়ে সুতার মাথা কাঠির সঙ্গে বেঁধে খেতের আইলে শক্তভাবে বসিয়ে ফাঁদ পাতে। অনেকে সন্ধ্যায় বক যখন বাসায় ফিরে তখন মার্বেল পাথর অথবা এটেঁল মাটির গোলাকৃতির গুলি বানিয়ে বাঁশের গোলাইনের সাহায্যে গুলি করে শিকার করে বক। আবার অনেক সাহেব লোক এক নলা বন্দুক ও দুই নলা বন্দুক দিয়ে বিলের পাড়ে থাকা বকের ঝাঁকের উপর গুলি করে বক শিকার করে। অনেকে কলের উপর মাছ লাগিয়ে ফাঁদ পাতে। অনেকে বড়শির মধ্যে মাছ লাগিয়ে ফাঁদ পাতে বড় দিঘিতে। অনেক বক শিকারি বক শিকার করে জীবিকা নির্বাহের জন্য বাজারে নিয়ে আসে বক। মুখরোচকরা তা কিনে নিয়ে যায়। অনেক ছেলেরা তা কিনে পালন করে। বকের প্রধান খাদ্য মাছ। বকের খোঁজে উপজেলার বুল্লা বিল, মাধবপুর বিল, বৈচা বিল, বাকসাইর বিল প্রভৃতিতে খাদ্য সঞ্চার করে থাকে। মুরাদপুর গ্রামের ওয়াহাব মিয়া জানান, বৃষ্টি বাদলের সময় বিল তথা জমিতে আসা পানিতেও বকেরা মাছ শিকার করে থাকে। বন উজার হওয়ায় বকের বাসস্থান নষ্ট ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ছোট ছোট ডোবা, নালা, জলাশয় সেচে মাছ ধরার কারণে আজ বকশূন্য হতে চলেছে। পরিবেশবিদ ও এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, বন-জঙ্গল উজারের কারণে বাসস্থান ধ্বংস ও বক শিকারের কারণে বক আজ আমাদের পরিবেশ থেকে হারাতে চলেছে। বক প্রজাতি রক্ষার্থে জনগণের সচেতনতা একান্ত দরকার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত