ঢাকা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শৈশবে দূরন্তপনায় বেড়ে ওঠা সাঈদ এখন শিকলবন্দি

শৈশবে দূরন্তপনায় বেড়ে ওঠা সাঈদ এখন শিকলবন্দি

ছিন্নমূল পরিবারের সদস্য আবু সাঈদ (৩২)। শৈশবে নানা কষ্টে বেড়ে উঠেছেন। কৈশোরে হাল ধরেছিলেন বাবার সংসারে। এরই মধ্যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তাকে সুস্থ করার চেষ্টায় টাকার অভাবে বন্ধ হয়েছে চিকিৎসাসেবা। ফলে ১৫ বছর ধরে শিকলবন্দি জীবন কাটছে আবু সাঈদের। ছেলেকে শিকলমুক্ত করতে আকুতি জানিয়েছে বাবা-মা। সম্প্রতি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা (বাঁধের মাথা) গ্রামে দেখা গেছে আবু সাঈদকে শিকলে বেঁধে রাখার দৃশ্য। দুই পায়ে আবদ্ধ শিকলে কোনোমতে চলাফেরা করছিলেন তিনি। জানা যায়, ওই গ্রামের দিনমজুর আকবর আলী ও আমেনা বেগম দম্পতির ছেলে আবু সাঈদ। প্রায় ১৪ বছর আগে সংসারের নানা অভাব-অনটনের কারণে ঢাকা গিয়ে একটি গার্মেন্টে চাকরি করছিলেন। এরপর হাসি ফুটে বাবা-মায়ের মুখে। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই সেই হাসি যেনো ম্লান হয়ে যায় তাদের। চাকরি করা অবস্থায় আবু সাঈদ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর তাকে বাড়িতে ফিরে এনে স্থানীয় কবিরাজ দ্বারা চিকিৎসাসেবা নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই চিকিৎসার ব্যয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে অবশেষে দুই পায়ে শিকল বেঁধে আবু সাঈদকে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। দরিদ্র বৃদ্ধ বাবা-মা তাদের সাধ্যমতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু তাদের পক্ষে আর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আবু সাঈদের জায়গা হয়েছে ঘর আর আঙিনায়। এ বিষয়ে আকবর আলী ও আমেনা বেগম দম্পতির কাছে জানতে চাইলে তারা কেঁদে কেঁদে বলেন, অন্যের বাড়িতে একদিন শ্রম না দিলে পেটে খাবার জোটে না। ছেলে আবু সাঈদকে নিয়ে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে সেই ছেলেটি মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তার নানা উৎপাতের কারণে সারাক্ষণ শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত