ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঝুঁকিপূর্ণ খেলা দেখিয়ে সংসার চলে সেলিমের

ঝুঁকিপূর্ণ খেলা দেখিয়ে সংসার চলে সেলিমের

বৈদ্যুতিক কাচের টিউবলাইট মুখে ভরে কচ-কচ করে চিবিয়ে খাচ্ছেন নির্দ্বিধায়। এই খেলা শেষ করে আগুন মোমবাতিতে ধরিয়ে মুখে পুরে নিচ্ছেন আবার কখনো খাচ্ছেন কেরোসিন তেলের জলন্ত আগুন। কি আজব ঘটনা। তিনি এমন ঝুঁকিপূর্ণ খেলা নিমিশেই দেখিয়ে বেড়াচ্ছেন ঝিনাইদহের বিভিন্ন হাটবাজার ও গ্রামে-পল্লিতে ঘুরে ঘুরে। দীর্ঘ ৩০ বছর জীবিকার তাগিদে বেছে নিয়েছেন এসব ভয়ংকর সব খেলা। আর এভাবেই পরিবার নিয়ে চলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ঢাকালে পাড়ার বাসিন্দা সেলিম সরকারের জীবন। সেলিম সরকারের দেখানো খেলা দেখে মুগ্ধ দর্শক মঞ্জুরুল করিম বলেন, এরকম আশ্চর্যজনক খেলা আমি আমার জীবনে কখনো দেখিনি। নিজেকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছে যে, আগুন ও কাচ মুখে দিয়েও তার মুখের কিছু হচ্ছে না। তার খেলা দেখে এখানে উপস্থিত সবাই আমার মতো অবাক হয়েছেন।

সবাই কম বেশি তাকে খেলা দেখানোর জন্য টাকাও দিয়েছেন। আশ্চর্যজনক খেলা দেখানো সেলিম সরকার জানান, আমি ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন হাটবাজারে এভাবে খেলা দেখাই। আমার খেলা দেখে দর্শকরা খুশি হয়ে যা দেয় তাতে আমার সংসার চলে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলেও বউ বাচ্চা নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্য এই পেশা আমাকে অনেকটা বাধ্য হয়েই বেছে নিতে হয়েছে। পড়াশুনা খুব একটা এগোয়নি। তাই ছোটবেলা থেকেই শুরু করেন এই খেলা। এখানে একটি টেকনিক আছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে কষ্ট তো হয়ই। এ বাদে আর কিছু শিখিনি। দুই বাচ্চা বৌ নিয়ে আমার সংসার। সবাইকে ভালো রাখতে অনেক কিছুই করতে হয়। সেই চেষ্টাটা করে যাচ্ছি। তিনি আরো জানান, দৈনিক আয়ের কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। কোনো দিন কিছুই হয় না আবার কোনো দিন হাজার পার হয়ে যায়। হাট-বাজারে প্রতিনিয়ত মজমা বা লোক জমায়েত করে এই খেলা দেখানোর চেষ্টা করি। জানি ঝুঁকিপূর্ণ তারপরও জীবিকার তাগিতে করতে হয়। তিনি হাসতে হাসতে বলেন, এ পেশায় অবশ্যই আমার ওস্তাদ আছে। তবে তাদের কথা বলা যাবে না। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস লেগেছে এই খেলা শিখতে। দেশের বহু জেলায় ঘুরেছি। অনেক বড় মজলিসে খেলা দেখাতে ভালো লাগে। মজমা ছোট হয়ে গেলে মন খারাপ হয়ে যায়। আসলে সব দিন তো আর একরকম হয় না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত